সংক্রমণের নিম্নমুখী ধারায় দেশে দিনে কোভিড রোগী শনাক্তের হার আবার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। পাশাপাশি সাত সপ্তাহ পর দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমেছে এক হাজারের নিচে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শনিবার ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ৭৫৯ জন রোগী শনাক্তের তথ্য জানিয়েছে।
তাতে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়ায় ৪ দশমিক ১৫। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি শনাক্তের হার এর চেয়ে কম ছিল। ওই দিন শনাক্তের হার ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
ওমিক্রনের দাপটে করোনাভাইরাসে দৈনিক শনাক্ত এক হাজার ছাড়িয়েছিল গত ৬ জানুয়ারি। সেদিন ১১৪০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর সংক্রমণ ক্রমেই বাড়তে থাকে।
গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৮১৬ জন। গত একদিনে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ২৪ জনের।
সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৭ হাজার ৩৪৩ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৮ লাখ ৪২৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
সে হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ১২ হাজার ৩৬৭ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা এই হিসাবে আসেনি।
বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে।
এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তা পাঁচ হাজারের নিচে নামে।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৫২৬ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৯ শতাংশের বেশি।
যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ এবং তিনজন নারী। তাদের মধ্যে দুইজন ঢাকা বিভাগের বিভাগের এবং তিনজন চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
এছাড়া একজন, খুলনা বিভাগের এবং দুইজন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট এবং ময়মনসিংহ বিভাগে গত একদিনে কেউ মারা যায়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তাদের মধ্যে ৫ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, দুইজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৯ লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪৩ কোটি ৩১ লাখের বেশি।