পদ্মায় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ, কমেছে দাম
Published : Sunday, 6 March, 2022 at 12:00 AM
মুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদীতে ইলিশের আহরণ বেড়েছে। পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে সুস্বাদু রুপালি ইলিশ। জেলা মৎস্য অফিসের সূত্রমতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুন্সীগঞ্জে ইলিশের আহরণ বেড়েছে তিন গুণ।
জানা গেছে, ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার সারা দেশে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাস জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করেছে। পাশাপাশি মাছের ছয়টি অভয়াশ্রমের মধ্যে পাঁচটিতে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে করে মুন্সীগঞ্জে পদ্মা নদীতে ইলিশের আহরণ বেড়ে তিন গুণ হয়েছে।
এদিকে, জেলার মধ্যে ভৌগলিকভাবে সদর, টংগিবাড়ী ও লৌহজং উপজেলার অংশে পদ্মা নদী পড়েছে। তবে ইলিশ বেশি পাওয়া যায় লৌহজং অংশে। এ জন্য লৌহজংয়ের মাওয়া মৎস্য আড়ত ইলিশের জন্য বিখ্যাত।
আড়তের সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হামিদুল ইসলাম সেখানে প্রায় প্রায় ৫০ বছর ধরে ইলিশের পাইকারি বেচাকেনা করেন। তিনি বলেন, ‘গত ৪-৫ দিন থেকে হঠাৎ ইলিশের আহরণ বেড়েছে। তবে প্রতিদিন মোট কী পরিমাণ ইলিশ মাওয়ার ২৯টি আড়তে বেচাকেনা হচ্ছে- এর কোনও পরিসংখ্যান রাখা হয় না। আনুমানিক এখন সব ধরনের মাছ মিলিয়ে প্রায় সোয়া কোটি টাকার মতো প্রতি সকালে বেচাকেনা হয়।’
এ মাছ ব্যবসায়ী বলেন, ‘৬০০-১৫০০ গ্রাম আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশই বেশি। সবই পদ্মার। কারণ দক্ষিণের নদীগুলোর বিভিন্ন স্থানে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু নিষিদ্ধ করার আগে শত শত অবৈধ কারেন্টজাল দিয়ে নদীগুলো ঘেরাও করে রাখেন জেলেরা। ফলে পদ্মায় ইলিশ আসতে পারে না।’
এদিকে, মাছের আহরণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দামও আগের চেয়ে কমেছে বলে জানান এই মাছ ব্যবসায়ী। তিনি জানান, এক কেজি বা এর চেয়ে বড় আকারের ইলিশ আগে বিক্রি হয়েছিল ১৫০০-১৬০০ টাকা কেজি দরে। তবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেটা কমে হয়েছে ১২০০-১৩০০ টাকা।
লৌহজং উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলার মধ্যে লৌহজং উপজেলার পদ্মা নদীর অংশে সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। তাই জেলের সংখ্যাও এই উপজেলায় বেশি। মোট এক হাজার ২৩২ জন নিবন্ধিত জেলে ইলিশ শিকার করেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামসুল করিম জানান, ১ মার্চ থেকে অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণার পর ইলিশের ঝাঁক দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তর দিকের নদীগুলোতে আসতে পারছে। ফলে ইলিশের আহরণ বেড়েছে তিন গুণ। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে যেখানে পুরো জেলায় গড়ে ইলিশ আহরণের পরিমাণ ছিল এক মেট্রিক টন। সেখানে মার্চের প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তিন মেট্রিক টন।