স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, আমি একজন মন্ত্রী এবং আরেকজন রিকশাওয়ালা। দিনের শেষে সবাই এ দেশের নাগরিক। সুতরাং দেশের উন্নয়ন হলে আমরা সবাই লাভবান হবো। আমি বিশ্বাস করি আইভীর নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এখানে কাউন্সিলররাও ব্যাপক জনপ্রিয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরভবনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সকলের যোগাযোগ থাকে। এই যোগাযোগের মাধ্যমে তারা সবার সঙ্গে সহায়তা করতে পারেন আয় বর্ধনে। এই আয় বর্ধন সরকার এবং স্থানীয় সরকারকে সহায়তা করতে পারে। কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার যদি আমরা দেখি, তখন কিন্তু সেখানে কিছু ছিল না। কোনো সম্পদ ছিল না। সেখানে বিচ্ছিন্ন পশুর মতো মানুষ বসবাস করত। সেখান থেকে তারা সমৃদ্ধ হয়েছে। আজ আমেরিকা পৃথিবীর শীর্ষ একটি দেশ। আমরা যদি আমাদের প্রোডাক্টিভ করতে পারি তাহলে আমরা আরো সমৃদ্ধ হতে পারি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নাতিশীতোষ্ণ দেশ। ব্রিটিশরা যখনই এ জায়গা দখল করেছে সবাই এখানে থেকে যেতে চেয়েছে। কারণ এখানে গরম, শীত কোনোটাই তীব্র নয় এবং এখানকার মাটি উর্বর। এ দেশটাকে ভাল জায়গায় নিয়ে যেতে না পারার কোনো কারণ নেই এটা বঙ্গবন্ধু বুঝতেন। তিনি ন্যায্য অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তখন তিনি বলেছিলেন আমার মাটি আছে, মানুষ আছে, আমি সোনার বাংলাদেশ করতে পারবো। বঙ্গবন্ধু থাকলে ২০০০ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশ হয়ে যেতাম।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে বলা হয় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। তারা আয় রোজগারের ব্যবস্থা করবেন এবং সেখান থেকে একটা অংশ নিয়ে তারা তাদের এলাকায় উন্নয়ন করবেন।
নারায়ণগঞ্জ ব্যবসা, শিল্প, সাহিত্য সব ক্ষেত্রে অত্যন্ত উর্বর ভূমি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আইভীর মধ্যে অনেক মেধা, বুদ্ধি সততা রয়েছে। একটা মানুষ যখন বুঝবে আমি যদি ৫ হাজার টাকা দিলে পাঁচ লাখ টাকার সার্ভিস পাই, তখন তারা দিতে না করবেন না।
তিনি বলেন, একটা বাজারে সিকিউরিটি গার্ড রেখে ১০ হাজার টাকা বেতন দেয়। আপনি গিয়ে বলেন নিরাপত্তা আমি দেব, সেখানে ৫০ জন লোক থাকলে দেখবেন সবার থেকে টাকা নিয়ে সেবাটা দিতে পারবেন। তখন সে দেখবে ১০ হাজার টাকার কাজ ৫০০ টাকা দিয়ে করে দিলেন। তখন সে আপনার সমর্থন করবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন করলেন, ময়লা অপসারণ করলেন এবং সেখানে যদি কিছু টাকা নেন তখন দেখবেন রাজস্ব আসছে। এছাড়াও তখন আর আপনাদের ভোট চাইতে যেতে হবে না। কারণ তখন আপনি প্রতিদিনই ভোট চাইবেন।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন- পৌরসভার বেতন পৌরসভা দেবে সরকার দেবে না। তখন পাঁচ মেয়র বিদেশে যেতে চেয়ে ফাইল দিলেন। তখন জানতে চাইলাম কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়েছে কিনা। তখন জানলাম এক পৌরসভায় দেওয়া হয়েছে। তখন শুধু ঐ এক মেয়রকেই আমি অনুমতি দিয়েছি। এতে সবার কাছে মেসেজ গেছে। আজ সব পৌরসভা নিজেদের বেতন নিজেরা দেয়।’
মন্ত্রী আরো বলেন, রাস্তার টাকা অনেক সময় ওভার ল্যাপিং হয়। আমি বলেছি আইডি নাম্বার ছাড়া কোনো টাকা দেওয়া হবে না। এতে ওভার ল্যাপিং বন্ধ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আমি বললাম প্রতিদিন পাঁচটি রাস্তার আইডি নাম্বার দেন। আমাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। এতে অনিয়ম বন্ধ হবে। নিয়মের মধ্যে রুজি রোজগার করেন তাহলে সকলে ভাল থাকবে, সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন হবে।