জাহাজের মিস্ত্রি সেজে যাবজ্জীবনের আসামি পালিয়ে ছিলেন ৫ বছর
Published : Friday, 11 March, 2022 at 12:00 AM
রাজধানীর কদমতলীতে হুমায়ুন কবির ওরফে টিটু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-প্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ মামুন শেখকে (২৮) গ্রেফতার করেছে র্যাব। তিনি ওই হত্যা মামলার ‘আয়নাবাজ’ কুখ্যাত প্রধান আসামি সোহাগ ওরফে বড় সোহাগের অন্যতম সহযোগীও।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানাধীন মেঘনা ঘাট এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করে।
দুপুরে যাত্রাবাড়ীতে র্যাব-১০ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর কদমতলী থানাধীন আউটার সার্কুলার রোডের নোয়াখালী পট্টিতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হুমায়ুন কবির ওরফে টিটুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আলোচিত এ হত্যাকা-ের আসামিরা হলেন- মোহাম্মাদ মামুন শেখ (৩৩), ‘আয়নাবাজ’ কুখ্যাত সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ (৩৪), সোহাগ ওরফে ছোট সোহাগসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জন।
টিটু হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি হিসেবে ২০১৪ সালে গ্রেফতার হয়েছিলেন মামুন শেখ। পরে জামিনে মুক্তি নিয়ে পলাতক হন তিনি। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর ওই মামলার দ্বিতীয় আসামির অনুপস্থিতিতে আদালত রায় প্রকাশ করেন। মামুন শেখের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-ে দ-িত করেন আদালত।
র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামুন জানান, তিনি নিজেকে লুকিয়ে রাখার জন্য মুন্সিগঞ্জে ৬ মাস, যশোরে ৯ মাস, মেঘনা ঘাট লাকি ডকইয়ার্ডে ৫ মাস, ধামরাইতে ৪ মাস, নবীনগরে ২ মাস, মেঘনা ঘাট মদিনা ডকইয়ার্ডে ৭ মাস ছিলেন। মামুন মিথ্যা পরিচয়ে জাহাজের মিস্ত্রি হিসেবে এসব স্থানে কাজ করছিলেন।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, পলাতক থাকাবস্থায়ই মামুন ২০১৫ সালে কদমতলী থানাধীন জুরাইন এলাকায় হাবু, চান মিয়া ওরফে চানু, শুকুর, দিপু, স্বপন, রকি ও ইব্রা মিলে কয়েকজনের সঙ্গে মিলে ইয়াবা, হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসা করতেন। টাকা ভাগাভাগি নিয়ে চান মিয়া ও ইব্রার সঙ্গে মামুনসহ অন্যদের বিবাদ দেখা দিলে তারা বিভক্ত হয়ে যান। পরে মামুন ও হাবুদের মাদক কারবারে চান মিয়া বিভিন্নভাবে বাধা দিতে থাকেন। এতে মামুনের দল চান মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে চান মিয়াকে হত্যা করতে কদমতলী থানার জুরাইন বাগানবাড়ী এলাকায় ইব্রার পাশের বাড়িতে যান তারা। সেখানে চান মিয়াকে না পেয়ে তার ভাই ও সহযোগী ইব্রাকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মামুন পেশায় একজন জাহাজ মেরামতের মিস্ত্রি। পেশার আড়ালে তিনি মাদক কারবার, ছিনতাই, ডাকাতি ও কন্ট্রাক্ট কিলিংসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় দুটি হত্যা মামলাসহ চারটি মামলা রয়েছে।