ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
মালয়েশিয়া পাচারকালে সাগর থেকে রোহিঙ্গাসহ ৫৮ জন উদ্ধার, আটক ২
Published : Saturday, 26 March, 2022 at 12:00 AM
কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলের গভীর সাগর থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুসহ ৫৮ জনকে উদ্ধার এবং দুই পাচারকারীকে আটক করেছে র?্যাব।
র?্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাইরুল ইসলাম সরকার জানান, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর উপকূলের গভীর সাগরে এ অভিযান চালানো হয়।
আটক পাচারকারিরা হলেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাগমারার মো. আবুল কাশেমের ছেলে মোহাম্মদ সোহেল (৩২) এবং কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশিখালী ইউনিয়নের ছামিরা পাড়ার বাসিন্দা মৃত সিরাজুল হকের ছেলে মুছা কলিমুল্লাহ (৪২)। মুছা কলিমুল্লাহ বর্তমানে কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ জানারঘোনা এলাকায় বসবাস করেন।
র‌্যাব বলছে, উদ্ধারদের মধ্যে ১১ জন শিশু, ২৪ জন নারী ও ২৩ জন পুরুষ। আর রোহিঙ্গারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা। স্থানীয় একজনের পরিচয় জানা যায়নি। এদের মধ্যে রয়েছেন উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পের বাসিন্দা।
বিকালে ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে খাইরুল বলেন, শুক্রবার ভোররাতে টেকনাফের শামলাপুর উপকূল দিয়ে ট্রলার করে সাগরপথে কিছু লোককে মালয়েশিয়া পাচারের খবরে র?্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে গভীর সাগরে সন্দেহজনক একটি ট্রলার দেখতে পেয়ে জব্দ করা হয়।
" এ সময় ট্রলারটির ডেকের নিচে ‘বিশেষ কায়দায় জিন্মি’ করে রাখা অবস্থায় ৫৭ জন রোহিঙ্গা এবং একজন স্থানীয় নাগরিককে উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় দুই পাচারকারিকে। "
র?্যাবের এ কর্মকর্তার ভাষ্য, “স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় উচ্চ বেতনে বিভিন্ন পেশায় চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে উদ্ধার হওয়া লোকজনের জনপ্রতি ৫০/৫৫ হাজার টাকার চুক্তি হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে আদায় করে দালালরা। অবশিষ্ট টাকা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থানকারী পাচারকারি চক্রের জাহাজে উঠার পর মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আদায় করার কথা ছিল।”
“মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে গত ৩ দিন আগে মালয়েশিয়ার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। পাচারকারি চক্রের সদস্যরা মালয়েশিয়াগামীদের ৪/৫ জনের ছোট ছোট দলে ভাগ করে টেকনাফের হাফিজাপাড়ার পাহাড়ি এলাকার গোপন আস্তানায় জড়ো করে। এক পর্যায়ে এ রকম কয়েকটি দল একসাথে জড়ো হওয়ার পর ছোট ছোট ট্রলারে করে গভীর সাগরে  অবস্থানরত বড় জাহাজে তোলার ব্যবস্থা করে পাচারকারি চক্র।”  
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, দীর্ঘদিন ধরে তারা শরণার্থী ক্যাম্প কেন্দ্রিক মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের সাথে জড়িত। এই পাচারকারিরা গভীর সাগরে অবস্থানরত জাহাজে তুলে দেওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে আসছিল। সাগরের বড় জাহাজের দালালদের হাতে তুলে দেওয়ার বিনিময়ে তারা মোটা অংকের টাকা আদায় করে।
উদ্ধার হওয়া লোকজনকে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর এবং আটক পাচারকারিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাইরুল।