Published : Sunday, 3 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 03.04.2022 12:09:58 AM
মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
কুমিল্লার
মুরাদনগর উপজেলার নিমাইজুড়ি নদীতে বাঁধ দিয়ে কৃষি জমি কেটে মাটি নেওয়ার
অভিযোগ ওঠেছে এক ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে। প্রভাব খাটিয়ে বিশাল এই নদীতে
বাঁধ দেওয়ায় ফসলি জমি বিলীন হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন
জানার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে সুশীল সমাজ ও
কৃষকদের মাঝে।
জানা যায়, উপজেলার চাপিতলা পূর্ব ঘোড়াশাল থেকে প্রবাহিত
হওয়া নদীটি চাপিতলা হয়ে রামচন্দ্রপুর তিতাস নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এটি
বুড়িনদীর একটি শাখা। যার নাম নিমাইজুড়ি নদী। এক সময় এ নদী দিয়ে যাত্রী ও
মালবাহী শত শত নৌকা এবং ট্রলার চলাচল করতো। বর্তমানে একটি মাটিখেকোর
সিন্ডিকেট নদীর মাঝে বাঁধ নির্মাণ করে। বাঁধের উপর দিয়ে প্রতিদিন ৮/১০টি
ট্রাক্টর কৃষি জমি কেটে মা-বাবা ব্রিকসে মাটি জোগান দিচ্ছে।
সরেজমিনে
গিয়ে দেখা যায়, চাপিতলা-পুস্কুরিনীরপাড় গ্রামের মধ্যস্থলে মা-বাবা নামক
একটি ইটভাটা রয়েছে। সেই ইটভাটার মাটির জোগান দিতে নদীটির মাঝখান দিয়ে বাঁধ
নির্মাণ করে কেটে নিচ্ছেন নাঙ্গলিয়া বিলের শত শত হেক্টর কৃষি জমি। এতো বড়
নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে নদীর স্বাভাবিক গতি পথ বন্ধ করে দেওয়ায় উদ্বিগ্ন
সচেতন মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানায়, কৃষি কাজই আমাদের
প্রধান পেশা। এ কাজ করেই আমরা জীবীকা নির্বাহ করি। কিন্তু ভূমিখেকো
ইটভাটার মালিকরা আমাদের এ রুটি রুজিতে আঘাত করছে। এরা যে ভাবে কৃষি জমি
নষ্ট করছে, তাতে কিছুদিন পর আমরা আর জমি খোঁজে পাবো না। প্রশাসন যদি এখনই
কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে আমাদের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাবে।
এ
বিষয়ে ইটভাটা মালিক ও চাপিতলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছা আল কবিরের সাথে
যোগাযোগ করা হলে তিনি চায়ের দাওয়াত দিয়ে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।
উপজেলা
কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, এ
ভাবে কৃষি জমি কেটে বিনষ্ট করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। ফসলি জমি রক্ষার্থে
প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে। সম্মিলিত ভাবে সকলে এগিয়ে আসার পাশাপাশি সচেতন
হতে হবে। অন্যথায় আগামী ১৫/২০ বছর পর কৃষি কাজ করার জন্য অনেক মাঠে জমি
পাওয়া যাবে না।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ দৈনিক
কুমিল্লার কাগজকে বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। খুব দ্রুত নদীটি খুলে দেওয়ার
জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।