Published : Sunday, 3 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 03.04.2022 12:09:46 AM
হাফেজ মাওলানা মো. মিজানুর রহমান ।।
১ম
রমজান: পবিত্র মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে
প্রদত্ত অনেক বড় নেয়ামত ও পুরস্কার। কিন্তু পুরস্কার তখনই হবে যখন এর কদর
করা হবে। নতুবা আমাদের মতো দুর্ভাগাদের জন্য কেবল এটি ‘রমজান রমজান’ বলিয়া
একমাস যাবৎ চিৎকার ছাড়া আর কিছুই হবে না। বস্তুত রোজা রাখার নিয়ম সবযুগেই
প্রচলিত ছিল। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (স.)
পর্যন্ত সকল নবী-রাসুল সিয়াম পালন করেছেন। নবীগণের মধ্যে হযরত দাউদ (আ.) এর
রোজা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল
(স.) মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, ইয়াহুদীরা আশুরার দিন সওম পালন করছে।
তাদের কাছ থেকে তিনি জানতে পারলেন যে, হযরত মুছা (আ.) এই বিশেষ দিনে রোজা
রাখতেন।
মাওলানা সৈয়দ সুলাইমান নদভী (রহ.) তাঁর বিখ্যাত সীরাত গ্রন্থে
উল্লেখ করেছেন, প্রাচীন মিসরীয়, গ্রীক ও পারসিকদের ধর্মেও সওমের বিধান
পাওয়া যায়।
সারকথা, ইসলামপূর্ব ধর্মসমূহে রোজার প্রচলন ছিল। কিন্তু
ধর্মের প্রতি উদাসিনতা ও অবাধ স্বাধীনতা রোজার ভাবমূর্তি ও প্রাণশক্তি
সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে।
চারিত্রিক মহত্ত্ব, নৈতিক পরিচ্ছন্নতা,
চিন্তার বিশুদ্ধতা, আত্মিক পবিত্রতা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম
মাধ্যম এ রোজা কালক্রমে অন্তঃসারশূন্য নিছক এক অনুষ্ঠানে পর্যবসিত হয়ে পড়ে।
এহেন অবস্থা থেকে রোজাকে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের দিকে ফিরিয়ে আনা এবং একে
আত্মিক, নৈতিক ও চারিত্রিক কল্যাণের ধারক বানানোর নিমিত্তে মহান আল্লাহ
তা’আলা রোজাকে এ উম্মাতের উপর ফরজ করেছেন। আল্লাহ তা’আলার ইরশাদ করেন, হে
ঈমানদারগণ, তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হয়েছে যেমন তোমাদের
পূর্ববর্তীদেরকে দেওয়া হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়াবান হতে পার। (আল কোরআন
সূরা বাকারা)।
সুতরাং রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও আত্মশুদ্ধির এই মোবারক
মাসটি যেন দুনিয়া উপার্জন ও লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতায় শেষ না হয় সেদিকে
লক্ষ্য রাখতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের কবুল করুন।
সভাপতি, জেলা ইমাম সমিতি ও খতিব, মুন্সেফবাড়ী জামে মসজিদ