ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার এনু-রুপনের এক মামলার রায় বুধবার
Published : Wednesday, 6 April, 2022 at 12:00 AM
ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলার রায় জানা যাবে বুধবার।
ঢাকার ক্রীড়াক্লাব গুলোতে ক্যাসিনো বন্ধে অভিযানের মধ্যে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় এই দুই ভাইকে।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা হয়।
তার মধ্যে ওয়ারী থানার অর্থ পাচার আইনের মামলায় এনু-রুপনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলায় বুধবার রায় দেবেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন।
গত ১৬ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম জানান।
মামলার অন?্য আসামিরা হলেন- মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম।
আসামিদের মধ্যে শিপলু, রশিদুল, সহিদুল ও পাভেল মামলার শুরু থেকে পলাতক। জামিনে আছেন তুহিন। এনু-রুপনসহ বাকি ৬ আসামি কারাগারে আছেন।
রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছরের কারাদণ্ড প্রত্যাশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর শওকত আলম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। কাজেই আশা করছি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।”
এনু-রুপনের আইনজীবী রাজীব সরকার বলেন, “আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, আসলে তা সত্য নয়। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। কাজেই আমরা প্রত্যাশা করছি আসামিরা খালাস পাবেন।”
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতা দুই ভাই, তাদের এক কর্মচারী এবং তাদের এক বন্ধুর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব।
তাতে নগদ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা, আট কেজি সোনা এবং ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়, যেগুলো জুয়ার টাকায় তৈরি সম্পদ বলে ওই সময় র্যাব জানিয়েছিল।
এর মধ্যে এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় দুই কোটি টাকা। এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান ২৫ নভেম্বর ওয়ারী থানায় একটি মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, এনু ও রুপন দীর্ঘদিন ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে আসছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালিত হলে তারা তাদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ গোপন করার জন্য কালামের কাছে রেখেছিল। কালাম তা গ্রহণ করে নিজের কাছে রাখে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অপরাধ।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২১ জুলাই ১১ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী।
গত বছরের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারক। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
এনু ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। এছাড়া এনু গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও তার ভাই রূপন ভূঁইয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
ক্যাসিনোবিরোধী সেই অভিযানে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশ কয়েকজন নেতার জুয়ার আখড়া চালানোর সম্পৃক্ততা প্রকাশ্য হয়।
এর পর ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ওই সময় ক্যাসিনো ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০টির বেশি মামলা করেছিল সংস্থাটি।