কুড়িগ্রামের রাজারহাটে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় ছেলে আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাড়ির পাশের ধানক্ষেত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে আব্দুল জলিল ঢাকা থেকে ছুরিটি এনেছিলেন বলে জানা গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রাজারহাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনীল কুমার রায় মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আব্দুল জলিলকে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউপির খিতাবখা সলিমবাজার এলাকার নজরুলের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ওই বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রথম দুই স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে গেলে তৃতীয় বিয়ে করেন পয়ার উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল। তার নির্যাতন সইতে না পেরে তিন মাস আগে নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দিয়ে তৃতীয় স্ত্রীও চলে যান। জলিলের বাবা পয়ার উদ্দিন ও মা জুলেখা বেগমও মামলার আসামি ছিলেন। তারা জামিন নিলেও ছেলে জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে বাঁচতে তৃতীয় স্ত্রীর করা মামলা মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন জলিল। এজন্য টাকার দরকার হওয়ায় বাবা পয়ার উদ্দিনকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল সে। রোববার ইফতারির পর টাকা চাওয়া নিয়ে বাবা-ছেলের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে বাবা পয়ার উদ্দিনকে উপর্যুপরি আঘাত করলে রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন পয়ার উদ্দিন। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে অস্ত্রের আঘাতে আহত হন স্ত্রী জুলেখা বেগমও। ঘটনার পরই পালিয়ে যান ছেলে জলিল।
রাতে গুরুতর আহত পয়ার উদ্দিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথায় ও বাম হাতে আঘাতপ্রাপ্ত জুলেখাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই রাতেই রাজারহাট থানায় ছেলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন মা জুলেখা। পরদিন সোমবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পয়ার।
রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার বলেন, জলিলের মা জুলেখা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার একমাত্র আসামি ছেলেকে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে এলাকার একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল। আজ দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।