Published : Wednesday, 6 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 06.04.2022 12:35:54 AM
আলমগীর হোসেন,দাউদকান্দি।।
আবহমান
কাল থেকে গ্রাম বাংলার চিরচেনা দৃশ্য বেত ফল। বাড়ির পেছনের পরিত্যক্ত
জমিতে, পুকুর পাড়, ঝোপঝাড়-জঙ্গলে, বাঁশঝাড়, গাব, শেওড়া, হিজল গাছ জুড়ে
অযত্নে বেড়ে ওঠত বেতগাছ। কম পরিচিত এবং অপ্রচলিত হলেও অনেকের কাছে বেতুন ফল
খুব প্রিয়। বেত ফলের আরেক নাম বেতুন। এটি যেমন পুষ্টিকর তেমন সুস্বাদু এবং
ওষুধিগুণে সমৃদ্ধ। মাটির অবস্থা ভেদে এই ফল খুব মিষ্টি কিংবা একটু টক হয়।
ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে বেতফল পাকে। অনেক সময় বৈশাখ মাস পর্যন্তও বেতফল থাকে।
পাকা বেতফল এমনিতেই খেতে দারুণ সুস্বাদু।
গ্রামের কৃষকের অতি প্রয়োজনীয়
গাছ হিসেবে বেতের অনেক কদর। জানা যায় বেত গাছের মূলের ক্বাথ সেবন করলে
মূত্র সংক্রান্ত যাবতীয় রোগ নিরাময় হয়। পিত্তথলির সমস্যা দূর করতে বেত ফলের
রস চিনির সঙ্গে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে পিত্তথলির যাবতীয় সমস্যা সেরে যায়।
বেত
দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প যেমন চেয়ার, টেবিল, মোড়া, ডালা, কুলা, চাঙ্গারি,
ঢুষি, হাতপাখা, চালোন, টোকা, গোলা, ডোল, ডুলা, আউড়ি, চাঁচ, ধামা, পাতি, বই
রাখার তাক, সোফা, দোলনা, খাট, ঝুড়ি, টেবিল ল্যাম্প, ল্যাম্পশেড ইত্যাদি
তৈরি করা হয়। এটি গৃহনির্মাণ কাজেও ব্যবহার হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ স্কুলের
প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক এবং জাতীয় পরিবেশ পদক প্রাপ্ত সমাজ
বিজ্ঞানী মতিন সৈকত বলেন' আমাদের শৈশব কৈশোরে বেত-বেতুন অপরিহার্য অনুষঙ্গ
ছিলো। তখন জনবসতি কম ছিল তাই চারপাশে জোপ-জঙ্গল ছিল। বিভিন্ন গাছের উপর
হেলান দিয়ে আয়েসি ভঙ্গিতে বেত গাছ ঝুলে থাকত। কাঁটাযুক্ত চিরল সবুজ পাতায়
বাতাস দোল খেতো। আঙুরের মত বেত ফল ঝুলে থাকত। আজকাল বেত এবং বেতুন নজরে
পরেনা। সময়ের প্রয়োজনে পরিবেশ বান্ধব বেতের চাষ অপরিহার্য।