আগামী
মে মাসের মাঝামাঝি মেয়াদ শেষ হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হচ্ছে না
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। ইভিএমে ভোট করতে সব প্রস্তুতি নিয়ে
জুনে এই সিটিতে ভোটগ্রহণ হবে বলে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার
জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের
কমিশনের প্রথম সভা শেষে ইসি সচিব বলেন, “কুমিল্লা সিটির সীমানা সংক্রান্ত
জটিলতা ছিল। সবশেষ ৪ এপ্রিলে স্থানীয় সরকার বিভাগ জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত
মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, এখন আর কোনো বাধা নেই ভোটে।”
আগামী ২০ জুনের
মধ্যে ভোট করার পরিকল্পনা জানিয়ে সচিব বলেন, “পুরো বিষয়টি নিয়ে এক মাস সময়
চলে গেছে। আজকে তফসিল দেওয়া হলে এখানে ভোট হবে ইভিএমে। সেজন্যে প্রশিক্ষণ ও
সিডি প্রস্তুতের বিষয় রয়েছে।
“রমজানের ছুটিও রয়েছে। এ জন্যে এ সময়ের
মধ্যে এ নির্বাচন করা যাচ্ছে না। কমিশন সব মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরবর্তী
কমিশন সভায় তফসিল ঘোষণা করা হবে।”
২০১৭ সালের ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটিতে
সর্বশেষ ভোট হয়েছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৭ মে প্রথম
সভা হয়। তাদের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে এ বছরের ১৬ মে। সিটি করপোরেশনে
মেয়াদ শেষের আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
হুমায়ুন
কবীর বলেন, “নতুন কমিশনের প্রথম সভা হয়েছে। এ সভায় পাঁচটি এজেন্ডা ছিল।
কুমিল্লা সিটি, কিছু পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন নিয়ে দ্বিতীয় কমিশন সভায়
সিদ্ধান্ত হবে কবে নির্বাচন হবে। তবে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৩০ জুনের
মধ্যে এ নির্বাচনগুলো সম্পন্ন করা হবে।”
কুমিল্লা সিটির বিষয়ে তিনি
বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে গেলে অনেক প্রস্তুতির বিষয়
রয়েছে। এক মাস সময় পার হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানিয়ে দেব
আমরা।”
নির্ধারিত সময়ের পরে ভোট আয়োজন হলে কোনো আইনি ব্যত্যয় হবে না বলে জানান ইসি সচিব।
“নতুন কমিশনের প্রস্তুতি ছিল। এ জন্যে ৭ মার্চ ও ৩০ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগে রিমাইন্ডার দেওয়া হয়। সীমানা নিয়ে জটিলতাও ছিল।
“আদালতে
বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন আমরা জানি, ইসিও নির্বাচন করার জন্যে মিটিং
করেছে। সব কিছু ব্যাখ্যা করার পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমাদের এ সময়টা লাগবে।
আইনি কোনো ব্যত্যয় ঘটেছে বলে মনে করেন না ইসি।”
সচিব বলেন, “একটি কমিশন
গেছে। নতুন কমিশন এসেছে ২৭ ফেব্রুয়ারি। আগের কমিশনকে জানানো হয়েছিল, তখন
তারা বলেছে নতুন কমিশন বিষয়টি দেখবেন, নির্বাচন করবেন।
“আমরা জানলাম...
পুরো বিশ্লেষণ করে দেখলাম, সামনে যে সময়টা রয়েছে তাতে সম্ভব হচ্ছে না। সময়
বাড়ানো যায়, তাতে সুন্দর নির্বাচনের জন্য ২০ জুনের মধ্যে হবে।”
বিলম্ব
হলে তাতে ব্যত্যয় হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “আইনি কোনো ব্যত্যয় ঘটবে বলে
কমিশন মনে করে না। (প্রশাসক নিয়োগের) বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানানো
হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চাইলে ওই সামান্য সময়ে প্রশাসক দিতে পারে।”
ভোট
না করে নতুন কমিশন সংলাপ করায় নির্বাচনে বিলম্ব হল কিনা- এমন প্রশ্নের
জবাবে সচিব বলেন, “আমরা প্রস্তুত ছিলাম। গত কমিশনেও নির্বাচন করতে চেয়েছি।
নতুন কমিশন করতে উদ্যোগী হয়েছে ৭ মার্চ থেকে। পরবর্তী সভা এ মাসের শেষ
সপ্তাহে হবে। তখন তফসিল হবে।”
দুটি পৌরসভা নিয়ে ২০১১ সালের জুলাই মাসে
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর দুটি নির্বাচন হয়। দশ বছর আগে
নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হলেও ২০১৭ সালে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হয়। দুই
নির্বাচনেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে পরাজিত করে বিএনপি নেতা জয়ী হন।
মঙ্গলবার
সকালের কমিশন সভায় চার নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। পরে ইসির মিডিয়া
সেন্টারে ব্রিফিংয়ের সময়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, যুগ্মসচিব
ফরহাদ আহাম্মদ খান ও এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।