৪০০ রান করাই যেখানে কঠিন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে, সেখানে কেশভ মাহারাজের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে প্রোটিয়াদের স্কোর পার হয়ে গেলো সাড়ে চারশত রান। শেষ পর্যন্ত ৪৫৩ রানে অলআউট হলো স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন ৬ উইকেট।
লিজাড উইলিয়ামসকে মেহেদী হাসান মিরাজ এলবিডব্লিউ করার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হলো প্রোটয়িাদের প্রথম ইনিংস।
বল হাতেই নয় শুধু, ব্যাট হাতেও মারাত্মক বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন কেশভ মাহারাজ। দক্ষিণ আফ্রিকার রানকে ৪০০ পার করে দিয়েছেন ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরিতে। শুধু তাই নয়, ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দিকেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পার পারলেন না।
সেই তাইজুল ইসলামই ফেরালেন কেশভ মাহারাজকে। তার ঘূর্ণি বলে বোল্ড হয়ে গেলেন প্রোটিয়াদের বিধ্বংসী হয়ে ওঠা এই ব্যাটার। ৯৫ বলে ৮৪ রান করেছেন তিনি। ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে তিনি ৩টি ছক্কার মারও মেরেছেন।
সে সঙ্গে পঞ্চম উইকেটের মাইলফলক পূর্ণ হয়ে গেলো তাইজুলের। টেস্ট ক্রিকেটে এ নিয়ে ১০মবার পঞ্চম উইকেটের দেখা পেলেন বাংলাদেশের এই বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনার। দলের পক্ষে অন্য তিন উইকেট শিকার করেছেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
দিনের শুরুতেই খালেদের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছিলেন কাইল ভেরেন। এরপর মাল্ডারকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন মহারাজ। দুজন মিলে মাত্র ১৬.৪ ওভারে গড়েছেন ৮০ রানের জুটি। যা দক্ষিণ আফ্রিকাকে পৌঁছে দিয়েছে ৪০০ রানের দোরগোড়ায়।
বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করে মাত্র ৫০ বলেই ৪টি চার ও ৩টি বিশাল ছয়ের মারে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে নেন মহারাজ। তবে অপরপ্রান্ত ঠিক হাত খুলে খেলতে পারছিলেন না পেস বোলিং অলরাউন্ডার মাল্ডার।
শেষ পর্যন্ত তাইজুলের দারুণ এক ডেলিভারিতে সোজা বোল্ড হয়ে যান ৭৭ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩৩ রান করা এই ডানহাতি ব্যাটার। মিডল স্ট্যাম্পে পিচ করা তাইজুলের সেই ডেলিভারি স্কয়ার টার্ন করে আঘাত হানে মাল্ডারের অফস্ট্যাম্পে। যা স্বস্তি ফেরায় বাংলাদেশ শিবিরে।
আগেরদিন ৫ উইকেটে করা ২৭৮ রান নিয়ে আজকের দিনের খেলা শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের সপ্তম ওভারে দলীয় ৩০০ পূরণ করে ফেলে তারা। তবে সেই ওভারেই ঠিক ৩০০ রানের মাথায় ভেরেনকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন খালেদ।
দুই অপরাজিত ব্যাটার কাইল ভেরেন ও উইয়ান মাল্ডারের আজকের দিনের শুরুটা ছিল সতর্ক-সাবধানী। তবে সুযোগ পেলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের চাকা সচল রাখছিলেন তারা। দিনের পঞ্চম ও ইনিংসের ৯৫তম ওভারের চতুর্থ বলে ঘটে উত্তাপ ছড়ানো ঘটনা।
খালেদের বলে স্ট্রেইট ড্রাইভ করেছিলেন ভেরেন। সেটি ধরে সোজা থ্রো করে বসেন খালেদ। যা গিয়ে লাগে ভেরেনের গ্লাভসে। নিজের ভুল বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে দুঃখপ্রকাশের ভঙ্গি করেন খালেদ। কিন্তু তা মানতে রাজি ছিলেন না ভেরেন। তিনি বরং নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে আড়চোখে দেখতে থাকেন খালেদকে।
তখন ভেরেন ও খালেদের মধ্যে বাদানুবাদের উপক্রম হলে ইয়াসির আলি রাব্বি এসে সরিয়ে নেন দুজনকে। আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস তখন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হককে বুঝিয়ে দেন তার দলের খেলোয়াড়দের আরও সতর্ক রাখার ব্যাপারে।
এক ওভার পর খালেদের করা অফস্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে চার মেরে দলীয় ৩০০ পূরণ করেন ভেরেন। তবে এক বল পরই দারুণ এক ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ভেরেনকে বোকা বানিয়ে স্ট্যাম্প ছত্রখান করে দেন খালেদ। সাজঘরে ফেরার আগে ২২ রান করেছেন ভেরেন।