দেশের ৩২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর নতুন করে আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত হয়েছে।
গত বছর তিনটি গুচ্ছে ২৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে। গুচ্ছ তিনটি হচ্ছে- সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং কৃষি ও কৃষি প্রধান।
এবছর গুচ্ছভুক্ত নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে- কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় জানানো হবে।
তবে এবছর প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগমের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের। এছাড়াও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ৩৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপাচার্যদের মনোনীত প্রতিনিধিরা।
সভায় গুচ্ছের বাইরে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দ্রুত ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি, ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ, ফলাফল ও ভর্তির সময় প্রকাশ করা, কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবজেক্ট এর প্লেসমেন্ট, মাইগ্রেশনের সময় নির্ধারণ, ভর্তি ফি একবার প্রদানের সুপারিশ করে ইউজিসি। এছাড়া ইউজিসির পক্ষ থেকে ভর্তি পরীক্ষার ফি যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা ও শিক্ষার্থী ভর্তি কম হয় এমন বিভাগগুলোর আসন সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
এছাড়া কোন সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে এবং দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ প্রদানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় উপাচার্যরা গুচ্ছের বাইরে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং পরামর্শ দিয়ে এ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা প্রয়োজনে এ চার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলাদা গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ারও পরামর্শ দেন।
প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে সাহসী ভূমিকা পালনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বাইরে থাকা আট বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ পদ্ধতিতে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে। এক্ষেত্রে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভারতের ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির (এনটিএ) আদলে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলে অবগত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে। তিনি গুচ্ছ পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয়ভাবে সাবজেক্ট পছন্দ ও মাইগ্রেশনের সুযোগ দেওয়া এবং যৌক্তিকভাবে ভর্তি পরীক্ষার ফি নির্ধারণের পরামর্শ দেন।
সভায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হয়েছে। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও এ পদ্ধতিতে পরীক্ষার সফলতার মাত্রা অনেক বেশি। এবছর ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি সহজ করা হবে এবং এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি জানান।