Published : Wednesday, 13 April, 2022 at 12:00 AM, Update: 13.04.2022 12:57:38 AM
হাফেজ মাও: মুফতী মোহাম্মদ ইব্রাহীম ক্বাদেরী ||
১২
এপ্রিল মঙ্গলবার ১০ রামাদ্বান ১৪৪৩ হিজরী। রামাদ্বানের রহমতের অংশের শেষ
দিন। সূর্য্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে একটি বৎসরের জন্য এই রহমতের অংশ আমাদের
কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাবে। আমরা কি পেরেছি এই অংশের যথাযথ মান রক্ষা করতে ?
পেরেছি কি আমাদের পক্ষে কিয়ামতের দিন সুপারিশকারী বানাতে ? এই রামাদ্বানের
প্রতিটি ইবাদত রোজাদার ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করবে। রহমতের অংশের প্রতিটি
সাহরী, প্রতিটি ইফতার, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির আজকার, দান খয়রাত, নামাজ,
তারাবীহ, তাহাজ্জুদ নামাজ প্রত্যেকটি ফরিয়াদ করবে। যখন মহান আল্লাহর দরবারে
এই রহমতের অংশ পৌঁছাবে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন
যে- তোমার মতামত ব্যক্ত কর- তখন এই রহমত বলবে যে- হে সর্বময় ক্ষমতার
মালিক- তোমার বান্দাহ আমাকে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে সম্মান করেছে, ত্যাগের
মাধ্যমে অতিবাহিত করেছে। হে আল্লাহ আমি তাঁর (বান্দাহ) পক্ষে সাক্ষী হয়ে
রইলাম ইহজগতে এবং পর জগতে। আর আল্লাহ আমি সুপারিশ করছি-তুমি তাকে তোমার
রহমতের খাতিরে ক্ষমা করে দাও, আর তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে রহমত দিয়ে
ভরপুর করে দাও। এমনি ভাবে প্রতিদিনের ভোরের ও সন্ধার ফেরেশতারাও রামাদ্বান
মাস ও রামাদ্বান ছাড়া অন্য মাসের ফেরেশতারা এই ভাবে সুপারিশ করতে থাকে। এক
পর্যায়ে মহান আল্লাহ খুশি হয়ে যান আর তাঁর বান্দাহদের জন্য রহমতের ঘোষণা
দিয়ে দেন। সুবাহানাল্লাহ।
এত বড় সুসংবাদ আর সুযোগ পাওয়ার পরও যারা এর
সুফল নিতে পারেনি তাদের মত হতভাগা আর কেউ নাই। এই রহমতের অংশ কেঁদে কেঁদে
বিদায় নেওয়ার সময় বলতে থাকে ওহে আল্লাহর বান্দাগণ- আমি এসেছিলাম তোমাদেরকে
রহমতের ভাগিদার করার জন্য কিন্তু তোমরা তা গ্রহণ করোনি। আমি এসেছিলাম
তোমাদেরকে মহান আল্লাহর নিকটে নেওয়ার জন্য কিন্তু তাও তোমরা অর্জন করতে
পারনি। চলে যাচ্ছি একটি বছরের জন্য। জানিনা আগামী বছর তোমাদের মধ্যে কে
বেঁচে থাকবে আর কে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে, তোমাদের মত অনেকে গত বছর এই
ধরাধামে ছিল এই বৎসর নেই। হায় আফসোস হায় আফসোস। আর সুসংবাদ ঐ বান্দাহদের
জন্য যারা ঈমান ও ইহতিসাবের মাধ্যমে এই অংশ ও মাসকে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর
নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জন করেছে। তাঁরা কতইনা ভাগ্যবান। হে আল্লাহ রাব্বুল
আলামীন, আমাদের সবাইকে এই রামাদ্বানের প্রতিটি অংশ রহমত, মাগফিরাত, নাজাত ও
লাইলাতুল ক্বদরের ফয়েজ ও নেয়ামত নসীব করুন। আমিন।
লেখক: ইমাম ও খতিব, কান্দিরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কুমিল্লা