বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কৃষ্ণসাগরে তলিয়ে গেছে ইউক্রেন যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কভা। ফ্ল্যাগশিপ জাহাজটি হারানো রাশিয়ার নৌবহরের জন্য বড় ক্ষতি বলে মনে করা হচ্ছে। এটি পুতিন বাহিনীর আত্মসম্মানেও আঘাত করেছে বেশ। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এই প্রথমবার কোনো যুদ্ধজাহাজ হারালো রাশিয়া।
রাশিয়া ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইভান মাওডসলির মতে, এর আগে শেষবার রাশিয়া কোনো যুদ্ধজাহাজ হারিয়েছিল ৮১ বছর আগে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জার্মানির হামলায় ক্রিমিয়া উপকূলে ডুবে গিয়েছিল রুশ জাহাজটি।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাশিয়া বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধজাহাজ হারিয়েছিল। চেরনোভা ইউক্রেনা ছিল তাদের সবশেষ যুদ্ধজাহাজ, যা ১৯৪১ সালে ডুবে গিয়েছিল।
অধ্যাপক মাওডসলি জানান, মস্কভার বয়স প্রায় ৪০ বছর হলেও এটি ছিল রুশ নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজগুলোর মধ্যে একটি। তিনি বলেন, যদি ধরে নেই, মস্কভা অপেক্ষাকৃত ছোট নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তার মানে, জাহাজটির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ও ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্বল ছিল।
এর আগে এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, গত বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া যুদ্ধজাহাজটি টেনে বন্দরে নেওয়ার সময় ডুবে গেছে। সাগর উত্তাল হওয়ায় সেটি ডুবে যায় বলে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে কিয়েভ দাবি করেছে, তাদের ছোড়া দুটি নেপচুন ক্ষেপণাস্ত্র রুশ যুদ্ধজাহাজটিতে আঘাত করেছে। যদিও মস্কো কোনো হামলার কথা জানায়নি। তারা আগুন লাগার পর জাহাজটি ডুবে গেছে বলে জানিয়েছে। রাশিয়া বলছে, আগুনের কারণে জাহাজটিতে রাখা গোলাবারুদ বিস্ফোরিত হতে থাকে এবং এরপর জাহাজের সব ক্রুকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
৫১০ ক্রুসহ ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজ মস্কভা ছিল রাশিয়ার সামরিক শক্তির প্রতীক। গত কয়েক সপ্তাহ ইউক্রেনে হামলার জন্য জাহাজটি ব্যবহৃত হলেও ১৯৮০ দশকে এটি তৈরি হয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ইউক্রেনেরই এক ডক ইয়ার্ডে।
সূত্র: বিবিসি