ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
বুড়িচংয়ে নিরাপদ সবজি চাষের উপর অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ
Published : Sunday, 17 April, 2022 at 12:00 AM
নিরাপদ সবজি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ ও উৎপাদন খরচ হ্রাস, দুটি বিষয় বিবেচনায় রেখে কৃষকদের হাতে তৈরি জৈব বালাইনাশক ব্যবহারে আত্মবিশ্বাসী করতে বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে ব্যতিক্রমি উঠান প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণগ্রাম গ্রামে ১৫ জন অগ্রগামী সবজি কৃষক এতে অংশগ্রহণ করেন। গ্রামের কৃষকরা সম্পূর্ণ রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করে সবজি চাষ করে আসছিলেন। প্রচুর কীটনাশক ব্যবহারের ফলে একদিকে যেমন উৎপাদন খরচ বেড়ে যেত, অন্যদিকে নিরাপদ সবজি সহবরাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না। গ্রামে প্রচুর মেহগনি গাছ বিদ্যমান থাকায় মেহগনির বীজের নির্যাস থেকে কীটনাশক বানিয়ে ফসলের জমিতে ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করে উপজেলা কৃষি অফিস।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, পূর্বে একদিন আলোচনা সভা করে মেহগনি বীজ থেকে কীটনাশক তৈরির বিষয়টি আলোচনা করি। কিন্তু বিষয়টি কৃষকদের কাছে একদম নতুন ধারণা হওয়ায় উনারা ফসলের জমিতে ব্যবহারের পূর্ণ আস্থা পাচ্ছিলেন না। তাই উঠান প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে কলমে ১৫ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করি। উপসহকারি কৃষি অফিসারের তত্বাবধানে এখন তারা নিয়মিত হাতে তৈরি জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করছেন।
উপসহকারি কৃষি অফিসার মো. মুজিবুর রহমান বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনা পেয়ে আমি কৃষকদের সাথে প্রাথমিক আলোচনা করে ইতিবাচক সাড়া পাই। আমরা কৃষকদের নিরাপদ সবজির গুরুত্ব ও কীটনাশকের খরচ হ্রাসের বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,  প্রতি ১৬ লিটার পানির জন্য ১৮-২০ টি মেহগনি বীজের সাদা অংশ থেতলে নিয়ে ৬-৮ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর এর সাথে ৫০ গ্রাম রসুন থেতলে নিয়ে ও ৫০ গ্রাম সাধারণ মানের ডিটারজেন্ট ভালোভাবে মিশিয়ে বিকাল বেলা ৮ শতাংশ জমিতে ম্প্রে করতে হবে। মাঠে থাকা করলা, তরমুজ, ঢেড়শ, বেগুন, টমেটো, মরিচ সহ বিভিন্ন ফসলের শোষক পোকা যেমন- জাব পোকা (এফিড), জ্যাসিড, সাদামাছি, ফল ছিদ্রকারী পোকা ও মাকড় দমনে এটি কার্যকরি ভূমিকা রাখে। ৫ দিন পর পর কয়েকটি স্প্রে করলে জমিতে এসব পোকার কোন আক্রমণ থাকবে না।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. আফরিণা আক্তার বলেন, পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় কৃষকদের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ আয়োজন অনেক সময় সম্ভব হয় না। তাই আমরা অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ আয়োজন করছি। মৌ চাষ ও নিরাপদ সবজি চাষ বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণে আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। আগ্রহী কৃষকেরা যোগাযোগ করলে আমরা তাদের চাহিদা মাফিক অনানুষ্ঠানিক উঠান প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো।