ঘরে নতুন সদস্য এলে তার নাম নিয়ে শুরু হয় উত্তেজনা। একেকজন একেক নাম রাখছেন। বাবা এক নাম রাখছে তো মা আরেকটি। দাদা বাড়ির লোকজন রাখছেন একটি, আবার নানা বাড়ির মানুষের পছন্দ অন্য নাম। এই নিয়ে তো মন কষাকষিও হয় প্রায়ই।
এরই সমাধান বের করেছেন ৩৩ বছর বয়সী টেলর হামফ্রে। টাকার বিনিময়ে তিনি নবজাতকের নাম রেখে দেন। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও নিউয়র্কের বাসিন্দা টেইলরের এটিই পেশা। এটিই তার আয়ের একমাত্র পথ। তিনি এটিকে তার ব্যবসায় বলেই সম্বোধন করেন।
জানেন কি? বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে অনেকেই অনুরোধ করতেন তার সন্তানের নামকরণের জন্য। কবি কখনোই কারো অনুরোধ এড়িয়ে যেতেন না বলেই জানা যায়। বিশ্বকবির মতো অনেক খ্যাতজনকেই এমন অনুরোধের সামনে পড়তে হয়েছে। তবে অনুরোধ এক জিনিস। আর সেই কাজটিকে একেবারে ব্যবসায় পরিণত করা খুব অন্য ব্যাপার।
তবে সেই কাজটিই করেছেন এই নারী। ২০১৫ সাল থেকে তিনি এই ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে নেটমাধ্যমেই তিনি তার পেশার কথা জানান। তিন বছর পর ২০১৮ সাল থেকেই টেলর তার ব্যবসা বাড়াতে থাকেন। মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করেন তিনি।
টেলরের কাছে সন্তানসম্ভবা ধনী দম্পতিরা তাদের অনাগত সন্তানের নামকরণের জন্য আসেন। টেলর তাদের ওই দম্পতিকে ফোন করে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন এবং সেই তথ্যের উপর নির্ভর করে তিনি নামকরণ করেন। এমনকি পারিবারিক ব্যবসার ধরনের উপর ভিত্তি করেও টেলর সেই নবজাতকের নামকরণ করেন।
টেলরের মতে, নাম শুধুমাত্র আমাদের পরিচয় বহন করে না। নামের মাধ্যমেই ফুটে আসে নিজেদের ব্যক্তিত্ব, পরিবারের সংস্কৃতি ছাড়া আরও অনেক কিছু।
টেলর নাম প্রতি দেড় হাজার থেকে ১০ হাজার আমেরিকান ডলার পারিশ্রমিক নেন। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ লাখ টাকা।টেলর জানিয়েছেন, এমন কখনো হয়নি যে, তার ঠিক করে দেওয়া নাম কারো অপছন্দ হয়েছে। নামের প্রথম অংশ হিসেবে না হলেও টেইলরের দেওয়া নাম মধ্যনাম (মিডল নেম) হিসেবেও ব্যবহার করেন অনেকে।
টেলরের টিকটকসহ ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেখানেই তিনি তার ক্লায়েন্টদের খুঁজে পান। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলোয়ারের সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজার। সবাই টেইলরের এই কাজটিকে বেশ প্রশংসা করেন।