জহির শান্ত:
কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দের পরই
ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটতে শুরু করেছেন প্রার্থীরা। নগরীর ওয়ার্ডে
ওয়ার্ডে চলছে মাইকিং, গানে গানে শোনানো হচ্ছে প্রার্থীদের গুণগান। সেই সাথে
ভোটারদের কাছে গিয়ে প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
এর আগে
শুক্রবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর অডিটরিয়ামে
কুসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার
কার্যক্রম শুরু হয়। চলে বেলা ১টা পর্যন্ত। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী
আরফানুল হক রিফাত পেয়েছেন দলীয় প্রতীক নৌকা। তার পক্ষে প্রতীক গ্রহণ করেন
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খোকন ও যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক আবিদুর রহমান জাহাঙ্গীর। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্য বিদায়ী মেয়র
মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীক। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম
উদ্দিন কায়সার ঘোড়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল হরিণ এবং
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম হাতপাখা প্রতীক পেয়েছেন।
তাদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক তুলে দেন কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী।
প্রতীক
পেয়ে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, দুই দফায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনেরমেয়র
থাকাকালে সাধ্যমতো উন্নয়ন করেছি। জনসাধারণের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা
ছিলো। মানুষ আমাকে সুখে-দুঃখে পাশে পেয়েছে। আশা করছি গত দুইবারের মতো এবারও
বিজয়ের হাসি হাসবো ইনশাআল্লাহ।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক
রিফাতের পক্ষে প্রতীক নিতে আসা আবিদুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, কুমিল্লা
মহানগর আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। ইনশাল্লাহ এবার নৌকার বিজয় হবেই হবে।
স্বতন্ত্র
প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, কুমিল্লার মানুষ পরিবর্তন চায়। সেই
পরিবর্তনের লক্ষ্যে নগরীর সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ আমাকে প্রার্থী করেছেন।
তারাই আমাকে বিজয়ী করে আনবেন।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দ
পাওয়ার পর বেলা ২টা থেকেই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন যদিও প্রচারণার প্রথম
দিনেই কুমিল্লা নগরীতে বৃষ্টি নেমেছে। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই প্রার্থীরা
চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগ। তবে মেয়র প্রার্থীদের চেয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে
কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণাই চোখে পড়েছে বেশি।
এদিন মেয়র
প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার সিটি
কর্পোরেশনের দক্ষিণাংশের (সদর দক্ষিণ উপজেলা) ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায়
গণসংযোগ করেন। দুপুরের পর ২১ নং ওয়ার্ডের নোয়াগাঁও চৌমুহনী এলাকা থেকে
আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন তিনি।
এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র
প্রার্থী ও সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু প্রতীক পেয়ে শিল্পকলা
একাডেমী প্রাঙ্গণে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সাথে কুশল বিনিময়ের পর বিকেলে
তাঁর ওয়ার্ড ভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে
আলাদা-আলাদা বৈঠক করেন বলে জানা গেছে।
আর আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী
আরফানুল হক রিফাত কোনো প্রচার-প্রচারণায় অংশ না নিলেও সন্ধ্যায় তিনি নগরীর
রাণীর দিঘির পূর্ব পাড়ে তার নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করেন। এসময় দলীয়
নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। তবে তার পক্ষে দলের নেতাকর্মীরা
বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং
কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানান, শুক্রবার থেকে আগামী ১৩ জুন পর্যন্ত
নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।
প্রার্র্র্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্পের জন্য আবেদন করতে হবে এবং প্রতিটি
ক্যাম্পে নির্বাচনি আচরণবিধি টানিয়ে রাখতে হবে। প্রার্থীদেরকে বিধি মেনে
নির্বাচনী প্রচারণার আহবান জানান তিনি।
আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় কুসিক
নির্বাচনের ভোটের মাঠে এবার পাঁচজন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়া সংরক্ষিত
নারী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন
প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।