দেশকে দেউলিয়াত্বের হাত থেকে বাঁচাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর জন্য তার সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। শুক্রবার (২৭ মে) এক ভাষণে শাহবাজ এমন পরিস্থিতির জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেই দায়ী করেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) পাকিস্তানে পেট্রল ও ডিজেলের দাম ৩০ রুপি করে বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বর্তমান সরকার। ফলে পাকিস্তানের ইতিহাসে এক ধাক্কায় পেট্রল-ডিজেলের সর্বোচ্চ দাম বাড়ার নজির তৈরি হলো। সরকারের ঘোষিত বর্ধিত দাম ২৭ মে থেকে কার্যকরও হয়।
জানা গেছে, পাকিস্তানে প্রতিলিটার পেট্রল এখন ১৭৯ দশমিক ৮৬ রুপি, ডিজেল ১৭৪ দশমিক ১৫ রুপি, কেরোসিন লিটারপ্রতি ১৫৫ দশমিক ৫৬ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
গত মাসে ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ অধিকাংশ সময় ঘরোয়া সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড (আইএমএফ) থেকে একটি সহায়তা প্যাকেজ পেতে পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়ানোর পরে ত্রাণ তৎপরতা শাহবাজ সরকারের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দাবি করে বলেন, দেশকে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শাহবাজ বলেন, বিগত সরকার ভর্তুকি ঘোষণা করেছিল কিন্তু সেটি কোষাগার থেকে সমর্থন পায়নি। সেকারণে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি প্রশমিত করার জন্য প্রতিমাসে ২৮ বিলিয়ন রুপির ত্রাণ সহায়তা প্যাকেজের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ। এই ত্রাণ এক কোটি ৪০ লাখ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ ইমরান খানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি করেছেন, আমরা নয়; আপনি তাদের কঠিন শর্ত মেনে নিয়েছেন, আমরা নয়; আপনি মুদ্রাস্ফীতির বোঝা জনগণের ওপর চাপিয়েছেন, আমরা নয়; আপনি দেশকে অর্থনৈতিক গোলযোগের দিকে ঠেলে দিয়েছেন, আমরা নয়...’।
এর আগে পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ানোয় শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারের তীব্র নিন্দা জানান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতি এই বদমাশদের হাতে মুদ্রাস্ফীতির আরেকটি বড় মাত্রা ধাক্কা খাবে’।
সূত্র: পিটিআই, এনডিটিভি