বাজেটে ‘এক ফিনিক্স পাখির গল্প’ বলেছেন অর্থমন্ত্রীর আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদের বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের ৫১তম বাজেট উপস্থাপন করেন। এতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক ফিনিক্স পাখির গল্পগাথা উপস্থাপন করেছেন।
অর্থমন্ত্রী তার সাহিত্যিক উপস্থাপনায় সেই ফিনিক্স পাখির জন্ম, বেড়ে ওঠা, শিক্ষা জীবন, পারিবারিক জীবন এবং রাজনৈতিক নানা ঝড়ঝঞ্ঝার চিত্র তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রীর উপস্থাপনা ছিল এরকম- ১৯৪৭ সাল। সময়টা তখন শরৎকাল। রূপময় বাংলার প্রকৃতিতে আদিগন্ত সবুজের সমারোহ। শিউলিঝরা সকাল, ভোরের দূর্বাঘাসে মুক্তদানা শিশির, নদীতীরে-বনের প্রান্তে কাশফুলের সাদা এলোকেশের দোলা, আকাশের নরম নীল ছুঁয়ে ভাসা শুভ্র মেঘের দল, নৌকার পালে বিলাসী হাওয়া। ভেসে বেড়ানো মেঘের প্রান্ত ছুঁয়ে উড়েচলা পাখ-পাখালির ঝাঁক, বাঁশবনে ডাহুকের ডাকাডাকি, বিলঝিলের ডুবো ডুবো জলে জড়িয়ে থাকা শালুক পাতা, আঁধারের বুক চিরে জোনাকির রুপালি সেলাই, ঘোরলাগা চাঁদের আলো- সব মিলিয়ে প্রকৃতিতে এক অনিন্দ্য সৌন্দর্যের আড়ম্বর।
অন্যদিকে বাংলার রাজনীতিতে তখন ভারতবর্ষের সদ্য অনাকাঙ্ক্ষিত বিভক্তির টানাপোড়েন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন ছাত্রনেতা। কলকাতায় দেশভাগের সূত্র ধরে ভারতের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রশমনে ব্যস্ত। পাশাপাশি প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কলকাতার পাট চুকিয়ে স্থায়ীভাবে ঢাকায় চলে আসার। ঠিক এমনি একটি ক্ষণে ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন তাদের প্রথম সন্তান শেখ হাসিনা। ছোটবেলায় সবার প্রিয় হাসু নামেই পরিচিত ছিলেন।
হ্যাঁ, অর্থমন্ত্রীর সেই ফিনিক্স পাখি আর কেউ নন বাঙালির আশা আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন ও সাহসের প্রতীক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাধাবিপত্তি ও নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শেখ হাসিনার গণতন্ত্র ও উন্নয়নের সংগ্রামী পথচলাকে অর্থমন্ত্রী ফিনিক্স পাখির গল্প আকারে তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তার এই অব্যাহত অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের অর্জনও তুলে এনেছেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এক ফিনিক্স পাখি। বাবা-মা, ভাইসহ আপন আত্মীয়দের হারিয়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসে তিনি তার জীবনকে উৎসর্গ করেছেন এই বাংলার আপামর মানুষের কল্যাণে। এ দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন অভিযাত্রায় একের পর এক লক্ষ্য অর্জনে যেন— কবিগুরুর ভাষায় বলতে হয় ‘আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিয়েছেন আকাশপানে চেয়ে।’
অর্থমন্ত্রী মনে করেন, সবকিছুই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হাল ধরেছেন বলে। শেখ হাসিনা আছেন বলেই বাংলাদেশ আজ শান্তি, সাম্য আর সম্প্রীতির দেশ, তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ, বাংলাদেশ আজ হতে যাচ্ছে উন্নত এক দেশ।
এসময় দেশবাসীর পক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিনম্র কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।