ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
পদ্মা সেতু খুলে যাবে সর্বদক্ষিণের সমৃদ্ধির দুয়ার
Published : Sunday, 19 June, 2022 at 12:00 AM, Update: 19.06.2022 1:25:34 AM
পদ্মা সেতু খুলে যাবে সর্বদক্ষিণের সমৃদ্ধির দুয়ার‘পদ্মা সেতু’ দক্ষিণাঞ্চলে বিপ্লব ঘটাতে যাচ্ছে। ঘুরে দাঁড়াবে স্থবির হয়ে থাকা বড় বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা রাখবে এ পদ্মা সেতু। শুধুমাত্র স্বপ্ন নয়। এবার বাস্তবেই গোটা দক্ষিণাঞ্চলের ভাগ্য বদলে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীরা তাদের বাণিজ্যিক প্রসার ঘটাতে নতুন পরিকল্পনা শুরু করেছেন।
এ ছাড়া এ জনপদের অন্যতম আলীপুর মহিপুর মৎস্যবন্দরের ব্যবসায়ীরা সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তের প্রহর গুনছে। স্বপ্নের এ সেতুটি উদ্বোধনের পর দেশের সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় এলাকায় সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের দুয়ার খুলে যাবে। আগামী ২৫ জুন সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় সাগর পাড়ের মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা, সমুদ্রবন্দর পায়রাসহ অপার সৌন্দর্যের বিস্তীর্ণ উপকূল। গত দুই দশকের বেশি সময়ে কুয়াকাটায় আগমন ঘটে দেশি বিদেশি হাজারো পর্যটকের। কিন্তু প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে সেই প্রতিবন্ধকতার অবসান ঘটবে। আর পর্যটকদের সেবার মান বাড়াবে আগের থেকে কয়েকগুণ। একই সঙ্গে দ্বার খুলবে অর্থনীতির চাকা। নদী বেষ্টিত এলাকার উন্নয়নে থাকছে না বাধার দেয়াল। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর ভাগ্য উন্নয়নে হবে নতুন নতুন শিল্পায়ন। চাহিদামতো গ্যাস, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেলে গতি ফিরবে অর্থনীতিতে। এমনটাই জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
আগত কয়েকজন পর্যটক জানান, পদ্মা সেতুর দ্বার খুলে দেওয়া হলে অল্প সময়ের মধ্যে কুয়াকাটায় পৌঁছানো যাবে। দুর্ভোগও থাকবে না। আগমন ঘটবে দেশি-বিদেশে পর্যটকের। তাই এখানে আরও হোটেল-মোটেলের প্রয়োজন হবে।
জল তরণী ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, কুয়াকাটাকে নতুন দিগন্তে উন্মোচিত করে দিবে পদ্মা সেতু। ইকো-ট্যুরিজমের প্রসার বাড়বে। সারা বছর পর্যটকে মুখর থাকবে কুয়াকাটার সৈকত।
কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে কয়েকগুন পর্যটক বাড়বে কুয়াকাটায়। সেজন্য আমরা ট্যুর গাইডদের পরিধি বাড়াচ্ছি। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। এছাড়া সৈকতকে আরো সৌন্দর্য করার চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছি।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা টোয়াকের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে কুয়াকাটার একটি আমুল পরিবর্তন হবে। ঢাকা-কুয়াকাটার দূরত্বটা কমে যাওয়ার কারনে ১০-১২ ঘন্টার পথ ৫-৬ ঘন্টায় পৌঁছানো যাবে। এর ফলে কয়েকগুণ পর্যটক বেশি আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুয়াকাটা ও আলীপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আনছার উদ্দন মোল্লা বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর গভীর সমুদ্র থেকে আহরণকৃত মাছ খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান করতে পারবে জেলেরা।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার জানান, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের প্রধান ভূমিকা রাখবে এই পদ্মা সেতু। উদ্বোধনের পর কুয়াকাটায় দ্বিগুণ নয় শতগুণ বেড়ে যাবে পর্যটক। এ ছাড়া এ অঞ্চলের মৎস্য খাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে এই পদ্মা সেতু। একইসঙ্গে বাড়বে বিনিয়োগ এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
কুয়াকাটা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল বারেক মোল্লা বলেন, স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া এই পদ্মা সেতু। শুধুমাত্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অবদান। এর সুফল ভোগ করবে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সাগর পারের মানুষ। আর সচল হবে অর্থনীতির চাকা। তাই প্রধানমন্ত্রীকে কুয়াকাটাসহ নদী বেষ্টিত উপকূলের মানুষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন।