সিলেট অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ পাঁচ হাজারের মতো মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত বন্যায় মারা গেছেন দুজন।
রোববার (১৯ জুন) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সিলেটের ৬০ এবং সুনামগঞ্জের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। সবশেষ খবর অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ৩২, নৌবাহিনীর ১২ এবং ফায়ার সার্ভিসের চারটি বোট কাজ করছে দু-জায়গায়। এরই মধ্যে তারা এক লাখ মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এরমধ্যে সুনামগঞ্জে ৭৫ হাজার, আর সিলেটে ৩০ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেছে। নিখোঁজের কোনো তথ্য এখনও আমরা পাইনি। গতকালের পর থেকে কোনো ক্যাজুয়ালটিও হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় মানুষ আটকে পড়ে আছে। সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি সামান্য উন্নতি হয়েছে, কিন্তু সুনামগঞ্জে পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত আছে। একই সঙ্গে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
বন্যায় প্রাণহানির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা দুজনের প্রাণহানির খবর পেয়েছি। একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী, সে স্রোতে ভেসে গেছে। আরেকজন বয়স্ক ব্যক্তি বিদ্যুৎস্পর্শে মারা গেছেন।
আবহাওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র থেকে জানা গেছে, সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকবে। মঙ্গলবার থেকে পানি কমতে থাকবে এবং টানা তিনদিন কমবে। এসময় উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে কিন্তু দক্ষিণাঞ্চল বা ভাটির দিকে অবনতি হবে।
এরই মধ্যে দেশের আরও বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। সেগুলো হলো রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ।
তিনি বলেন, এখন ১২টি জেলা বন্যা কবলিত। প্রায় ৭০টি উপজেলায় বন্যা রয়েছে। এটা বাড়ছে।
মো. এনামুর রহমান বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কমবে, কিন্তু উত্তরাঞ্চলে বন্যা বাড়বে, কারণ ব্রহ্মপুত্র, ধরলা তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে।
বন্যার্তদের সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, গতকাল পর্যন্ত আমরা একেকটি জেলায় ৮০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম, আজ আরও ৫০ লাখ করে দিয়েছি। মোট এক কোটি ৩০ করে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা দুটি জেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যে জেলাগুলো নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে সেগুলোতে আমরা ১০ লাখ টাকা, ১০০ টন চাল আর চার হাজার প্যাকেট করে শুকনা খাবার এরই মধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি।
যেভাবে বন্যা হয়েছে আরও ত্রাণ দরকার জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যেটা দিচ্ছি বিতরণ করে পারছে না। এ কারণে সাপ্লাইয়ের একটি কনটিনিউয়াস চেইন মেইনটেইন করা হচ্ছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী আমাদের আরও ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত জিআর চাল আছে, শুকনা খাবারও আছে। যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানে আমরা দেবো।