সিলেটের বন্যা পরিস্থিতিতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গতকাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ১৭ ও ১৯ পদাতিক ডিভিশন মোট ১১ হাজার ৩৮০টি পরিবারকে উদ্ধার করেছে। একইসঙ্গে ২৩ হাজার ৪৪৬টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও ১০ হাজার ৩১৪টি পরিবারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
আজ (বুধবার) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। সরকার প্রধান ২১ জুন পর্যন্ত বন্যাকবলিত সিলেটে বিভিন্ন বাহিনীর কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি জানান, নৌবাহিনীর ছয় কর্মকর্তা ও ১০০ জন ডুবুরি মোট ২০০টি পরিবারকে উদ্ধার, ৮০০টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও ৩০টি পরিবারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৭০ কর্মকর্তা ও এক হাজার ৫৫০ জোয়ান মিলে ১২০০টি পরিবার উদ্ধার, চার হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও ৫০০টি পরিবারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়াও ১০০টি পরিবারকে উদ্ধার, ৬০০টি পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও ৩০টি পরিবারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন কোস্ট গার্ডের চার কর্মকর্তা ও ৭৬ জন নাবিক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন বাহিনীর শতাধিক বোট, হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য যানবাহন উদ্ধারকাজে নিয়জিত রয়েছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ৫০০ সদস্য সাতটি হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমানসহ সিলেট এলাকায় উদ্ধারকার্য পরিচালনা ও ত্রাণ বিতরণের জন্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বাহিনীগুলোর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগের নেতাকর্মীদের বন্যাকবলিত মানুষদের সহায়তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ কাজ চালাচ্ছেন।’
মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি গতকাল সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং নেত্রকোনা জেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। সিলেট অঞ্চলে এক হাজার ২৮৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে ৩০০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।’
বন্যায় আক্রান্ত এলাকায় সরকারি সহযোগিতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত বন্যাকবলিত ১১টি জেলায় ৯০০ মেট্রিক টন চাল এবং তিন কোটি ৩৫ লাখ নগদ টাকা এবং ৫৫ হাজার শুকনা এবং অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, তা হলো শুকনো খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি। আমরা তার ব্যবস্থাই করছি। আমাদের দলের নেতাকর্মীরাও সাধ্যমত দুর্গত মানুষের ঘরে শুকনো এবং রান্না করার খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।’
সার্বিক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘সিলেট ও সুনামগঞ্জে পানি কমতে শুরু করেছে। আশা করা হচ্ছে দুই-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হবে। বন্যার পানি নেমে গেলে বাড়িঘর মেরামত এবং কৃষি পুনর্বাসনের কর্মসূচি হাতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। মন্ত্রণালয়গুলো এটি বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিচ্ছে।’