‘জিতবো’-আগের দিন ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন কিংবা অধিনায়ক সাবিনা খাতুন; কেউই সাহস করে কথাটি বলতে পারেননি। পারবেন কী করে?
বাংলাদেশের চেয়ে যে ঐতিহ্য আর শক্তিতে অনেক এগিয়ে মালয়েশিয়া। কোচ ও অধিনায়কের মুখে একটি কথাই ছিল, আমরা ভালো খেলা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবো। সেই ভালো খেলাটা এতটাই ভালো হলো যে, মাঠে মালয়েশিয়ার মেয়েরা পাত্তাই পেল না সাবিনা-কৃষ্ণাদের কাছে।
ফিফা র্যাংকিংয়ে ৬১ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটিকে ৬-০ গোলে হারিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশের মেয়েরা।
প্রথমার্ধে ৪-০। ম্যাচ থেকে তখনই ছিটকে পড়েছিল মালয়েশিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে আরো দুই গোল করলেন মনিকা-কৃষ্ণারা। বাংলাদেশ যেখানে একটি পয়েন্ট পেলেও খুশি থাকতো, সেখানে বিশাল জয়। এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারতো!
শুরুর মিনিট থেকেই মালয়েশিয়ার রক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়েন সাবিনারা। একের পর এক গোল করে প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকেন ৪-০ ব্যবধানে। আঁখি খাতুন জোড়া গোল করেন। অন্য ৪ গোল করেন সাবিনা, স্বপ্না, মনিকা ও কৃষ্ণা।
দুই দেশের জাতীয় দলের পূর্বে হওয়া একমাত্র সাক্ষাতে জিতেছিল মালয়েশিয়ার মেয়েরাই। স্বাভাবিকভাবেই ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মালয়েশিয়াই ছিল ফেবারিট। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে র্যাংকিংয়ের পার্থক্যটা নেহাতই একটা সংখ্যায় পরিণত করলো বাংলাদেশের মেয়েরা।
তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ। ডান দিক থেকে সানজিদার ক্রসে সাবিনার শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে গেলে সে যাত্রা রক্ষা পায় মালয়েশিয়া।
৯ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মারিয়া মান্ডার কর্নার থেকে আঁখি খাতুন ডান পা দিয়ে সহজেই গোল। ২৬ মিনিটে ডান দিক থেকে সিরাত জাহান স্বপ্নার ক্রস ধরে অধিনায়ক সাবিনা খাতুন গোলরক্ষককে কাটিয়ে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন।
৩০ মিনিটে সাবিনার ক্রস থেকে আঁখি খাতুন ডান পায়ের টোকায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল করেন। প্রথমার্ধের শেষ গোলটি করেছেন সিরাত জাহান স্বপ্না। সাবিনার বাড়িয়ে দেওয়া বলটা শুধু জালে পাঠিয়েছেন স্বপ্না।
৬৭ মিনিটে মালয়েশিয়ার ডিফেন্ডারদের রীতিমতো ঘোল খাইয়ে সহজে দলের পঞ্চম গোলটি করেছেন মিডফিল্ডার মনিকা চাকমা। ৭৪ মিনিটে রিতু পর্নার লবে কৃষ্ণা রানী সরকারের হেড জড়িয়ে যায় মালয়েশিয়ার জালে। ব্যবধান দাঁড়ায় ৬-০ গোলের।
গত ১৪ জুন মালয়েশিয়ায় এশিয়ান কাপ বাছাই ফুটবলের শেষ ম্যাচ জামাল ভূঁইয়াদের ৪-১ গোলে হারিয়েছিল মালয়েশিয়া। ছেলেরা হারলেও মেয়েরা ওই দেশটিকে রীতিমত উড়িয়ে দিলো।
বাংলাদেশ একাদশ
রূপনা চাকমা (মিলি), শিউলি আজিম, আঁখি খাতুন, মাসুরা পারভীন, শামসুন্নাহার সিনিয়র, মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, সানজিদা আক্তার (শামসুন্নাহার জুনিয়র), কৃষ্ণা রানী সরকার (মার্জিয়া আক্তার), সিরাজ জাহান স্বপ্না (ঋতুপর্ণা চাকমা), সাবিনা খাতুন (অধিনায়ক)(আনুচিং)।