Published : Sunday, 26 June, 2022 at 12:00 AM, Update: 26.06.2022 2:33:28 AM

তানভীর দিপু:
স্বপ্নের
পদ্মা সেতু নিয়ে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের বন্যা সারা দেশেই। জাতি হিসেবে
স্বনির্ভরতা এবং আত্ম মর্যাদার প্রতীক সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গতকাল ২৫
জুন ভার্চুয়ালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন সারা দেশের মানুষ। পদ্মা
সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাঁজিরা প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার হাত ধরে যোগাযোগের সূতিকাগার চালুর উৎসবের সূচনা হলেও এর রেশ
ছুঁয়ে গেছে শত শত মাইল দূরের জেলা কুমিল্লাকেও। শনিবার সকালে জেলা শিল্পকলা
একাডেমি থেকে পদ্মা সেতুর প্রতিকৃতি নিয়ে আনন্দ র্যালি আর টাউন হল মাঠে
বসে সেতুর জমকালো উদ্বোধন উপভোগ করেছেন কুমিল্লাবাসী। কুমিল্লাজুড়ে মানুষের
উচ্ছ্বাস ছিলো চোঁখে পড়ার মতন। জেলা পুলিশের উদ্যোগে বিকেলে বের হয়
বর্ণাঢ্য পরিবহন র্যালি এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহর
প্রদক্ষিণ করে শোভাযাত্রা।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সকাল
সাড়ে ৯ টায় একটি বর্ণাঢ্য র্যালী জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয়।
নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে টাউনহলে এসে মিলিত হয়। আনন্দ র্যালীতে
সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ
করেন। আনন্দ র্যালীর নেতৃত্ব দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল
হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ,
জেলা পরিষদের প্রশাসক রিয়ার এডমিরাল ( অবঃ) আবু তাহের, স্থানীয় সরকার
কুমিল্লার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক
মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি নাজমা
আশরাফী, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী ড.সফিকুর রহমান,
বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারী কলেজের
অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.আবু খান, কুমিল্লা মহিলা সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ
প্রফেসর জামাল নাছের, র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানী কমান্ডার মেজর
মোহাম্মদ সাকিব হোসেন, নারীনেত্রী পাপড়ী বসুসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের
উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সকাল দশটায় নগরীর টাউনহলে এসে দেখা যায়, বড়
পর্দায় পদ্মাসেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান দেখতে ভীড় করেছেন সাধারণ মানুষ। নানান
শ্রেণী পেশার মানুষ চেয়ারে জায়গা না পেলেও দাঁড়িয়ে দেখেন দেশের
দক্ষিণাঞ্চলের সমৃদ্ধির দুয়ার খুলে যাবার দৃশ্য। কুমিল্লায় বসবাসকারী
পদ্মার ওপারের মানুষের জন্য এই দৃশ্য যেন দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে যাবার
আনন্দের।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির
জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করে
আমাদেরকে একটি পতাকা দিয়েছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে আমরা এই পদ্মা সেতু
পেয়েছি। যা এখন আমাদের আত্ম মর্যাদার প্রতীক। এই সেতু উত্তর এবং দক্ষিণ
বঙ্গকে সংযুক্ত করবে। সারা বাংলাদেশের উন্নয়ণ অগ্রযাত্রায় অনস্বীকার্য
ভূমিকা রাখবে। এটি একটি অনন্য মাইল ফলক। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে।
পুলিশ
সুপার ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু । বাংলাদেশের
ভবিষ্যত উন্নয়ণের অগ্রযাত্রার মাইল ফলক এবং নতুন ভিত্তি রচনা করে দিয়েছে।
এটি শুধু ইট সিমেন্টের অবকাঠামো নয়, এটি সারা বাংলাদেশের প্রাণের সেতু।
শুধু
কুমিল্লা নগরীতে নয়, বিভিন্ন উপজেলাতেও প্রশাসন ও রাজনৈতিক পর্যায়ে
অনুষ্ঠিত হয় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সেসব এলাকা থেকেও সরাসরি পদ্মা
সেতুর উদ্বোধন সম্প্রচারিত হয়। বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষক ও
ছাত্র-ছাত্রীদের দেখানো হয় পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।