প্লেব্যাক সম্রাট খ্যাত দেশের বাংলা গানের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২০ সালের ৬ জুলাই কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।
আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। ১৯৮২ সালে ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’ গানের জন্য তিনি প্রথম জাতীয় পুরস্কার পান।
বাংলা চলচ্চিত্রে ১৫ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুস, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যে খানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন, ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা, সবাই তো ভালোবাসা চায় প্রভৃতি।
শারীরিক অসুস্থতার জন্য ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এন্ড্রু কিশোরকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর তার শরীরে ধরা পড়ে ক্যান্সার। সেখানে তিনি কয়েক মাস চিকিৎসা নেন। পরে চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলে তাকে নিজের ইচ্ছেতেই ২০২০ সালের ২০ জুন রাজশাহীতে আনা হয়। এরপর তিনি মহানগরীর মহিষবাথানে বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাসায় বসবাস শুরু করেন। ৬ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১৫ জুলাই রাজশাহী সার্কিট হাউস সংলগ্ন খ্রিস্টান কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
১৯৫৫ সালে এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর ছয় বছর বয়স থেকে সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি রাজশাহী বেতারে নজরুল, রবীন্দ্র, লোকসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান শাখায় তালিকাভুক্ত হন।
চলচ্চিত্রে তার প্রথম গান মেইল ট্রেন (১৯৭৭) চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই’। তিনি বড় ভাল লোক ছিল (১৯৮২) চলচ্চিত্রের ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি সারেন্ডার (১৯৮৭), ক্ষতিপূরণ (১৯৮৯), পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৯১), কবুল (১৯৯৬), আজ গায়ে হলুদ (২০০০), সাজঘর (২০০৭) ও কি যাদু করিলা (২০০৮) চলচ্চিত্রের গানের জন্য আরো সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি পাঁচবার বাচসাস পুরস্কার ও দুইবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।
এন্ড্রু কিশোরের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্মস্থান রাজশাহীতে আজ স্মরণসভার আয়োজন করেছে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। এদিন বিকেল ৪টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট রাজশাহী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।