নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার তিতাসে মারা যদওয়ার চারদিন পর বিশা পাগলা নামে পরিচি এক ফকিরের ঘর থেকে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণসহ একটি আইফোন মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১৩ জুলাই) সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিশা পাগলার ওয়ারিশ ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে তার ঘর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়। বিশা পাগলা নামে পরিচিত হলেও তিতাস উপজেলার গাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির আসল নাম আমির হোসেন। গত শুক্রবার রাতে ৫৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বিশা পাগলা কবিরাজি করতেন এবং মাজারে মাজারে ঘুরতেন। কখনও কখনও ভিক্ষাও করতেন। তার একজন কথিত মেয়ে আছে। শুক্রবার রাতে এই ফকিরের মৃত্যুর পর তার ঘরের মালামাল কি কি আছে- তা পরে দেখা হবে বলে স্থানীয় চেয়ারম্যান তালা দিয়ে রাখেন। গত মঙ্গলবার তিনি ঘরের ভেতর মালামাল দেখতে গিয়ে দেখেন সিন্দুকে বিপুল পরিমাণ টাকা। মুহূর্তেই এ খববর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । জানানো হয় পুলিশকেও। পরে আবার ঘরটি তালা বদ্ধ করে রাখা হয়।
পরদিন বুধবার পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীরা টাকা গুলো গননা করে তার বড় ভাই আওলাদ হোসেন, ছোট ভাই জামাল হোসেন, বোন মোর্শেদা, পালিত মেয়ে তাসলিমা ও ভাতিজা মিঠুর কাছে বুঝি দেয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম সোহেল সিকদার, কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সারওয়ার হোসেন বাবু, কড়িকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মুরাদ, বলরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুর নবী, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশা পাগলার বড় ভাই আওলাদ বলেন, আমার ভাই একজন আধ্যাত্মিক পাগল ছিলো। তার কাছে অনেক দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসতো এবং ভালোবেসে টাকা-পয়সা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র দিতো। এগুলো সে জমিয়ে রাখতো কিন্তু মৃত্যুর পর তার ঘরে এতো টাকা পাওয়া যাবে আমরা কল্পনা করতে পারি নাই।
তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের স্বপ্ন ছিলো রাস্তার পাশে একটি মসজিদ করার। আমরা আমার ভাইয়ের রেখে যাওয়া টাকা দিয়ে একটি মসজিদ, মাদ্রাসা ও একটি মাজার তৈরি করবো।
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গাজীপুর গ্রামে মৃত বিশা পাগলা নামে এক পাগলের ঘরে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়ার খবর পেলে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। বুধবার পুলিশের হেফাজতে টাকা গুলো উদ্ধার করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী তাদের ওয়ারিশদের হাতে বুঝিয়ে দেয়।