কুমিল্লার দেবিদ্বারে চাঞ্চল্যকর মেহেদী হাসান শান্ত হত্যার প্রকৃত খুনি পলাতক আজমল ফুয়াদ সাজিদকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন এলাকাবাসী।
রবিবার সকাল ১১টায় উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের নুরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ইউপি সদস্য ইউনুঠ মিয়া, স্থানীয় জয়দল হোসেন, হানিফ মিয়া, বাহাদুর ইসলাম, মফিজুল ইসলাম, সাদ্দামের মা শাহেরা বেগম, সাদ্দামের স্ত্রী কুলছুম বেগম বড় ভাই জাহিদ হাসান এবং সাজিদের ছুরিকাঘাতে আহত মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘সরকার বাড়ি ও হবির বাড়ির’ আধিপত্য নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজিদ প্রকাশ্যে এলোপাতারি ৫জনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে শান্ত ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ দৃশ্য দোকানে উপস্থিত সকলেই দেখেছেন, উপস্থিত সাদ্দামও এ ঘটনা দেখেছে। সে ঘটনার স্বাক্ষী দিতে রাজী হওয়ায় তাকে উলটো আসামী করা হয়েছে, আমরা তার মুক্তির দাবি জানাই। পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত খুনি সাজিদের ফাঁসির দাবি করছি।
গ্রেফতারকৃত সাদ্দামের মা শাহেরা বেগম কোরআন হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, দেশে এখনও ন্যায় বিচার হয়। আমার ছেলে ক্যান্সার আক্রান্ত তাকে ১১ বার কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে। আর কয়দিন বাঁচে তা নিশ্চয়তা নেই। ঘটনা দেখা ও স্বাক্ষী দিতে রাজী হওয়ায় আমার ছেলেকে বিনাকারণে আসামী করা হয়েছে। সাজিদ শান্তকে হত্যা করেছে এ দৃশ্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলে দেখেছে। সাজিদ যদি হত্যা না করে থাকে তাহলে সে পলাতক কেন ? তাকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হোক। পরে তিনি কোরআন হাতে নিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত ছেলের জন্য আহাজারী করেন।
ইউপি সদস্য ইউনুস মিয়া ও জাহিদ হাসান বলেন, শান্তের বাবা প্রভাবশালী কিছু লোকের প্ররোচণায় নিরাপরাধ লোকজনের নামে থানায় মিথ্যা মামলা করেছেন। নিহত শান্তের বাবা আমার কাছে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন টাকা দিলে সে নাকি সাদ্দামের নাম এজহার থেকে বাদ দিয়ে দিবে, টাকা না দেওয়ায় সে আমার ভাইয়ের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অথচ হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। মানববন্ধনে নুরপুর এলাকার শত শত নারী পুরুষ ও শিশুরা অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, শান্ত হত্যার পর তার বাবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। খুনিকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। খুব শিঘ্রই খুনিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জুলাই বিকালে নুরপুর গ্রামের ‘সরকার বাড়ি ও হবির বাড়ির’ আধিপত্য নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাজিদ প্রকাশ্যে এলোপাতারি ৫জনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে মেহেদী হাসান শান্ত ঘটনাস্থলেই মারা যায়।