জ্বালানি
সাশ্রয়ে মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে ১ ঘণ্টা লোডশেডিং করে পরিস্থিতি সামাল
দিতে না পারলে পরে তা ২ ঘণ্টা করা হবে। সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ,
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি
বলেন, ‘আগামীকাল থেকে ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিং। চেষ্টা করব দিনের বেলা করতে।
এক সপ্তাহ আমরা এটা দেখব। আগে থেকে জানানো যায় কি না সেটাও দেখব। এক সপ্তাহ
পর যদি দেখি এতে হচ্ছে না, তাহলে পরবর্তীতে আরও ১ ঘণ্টা লোডশেডিং হবে।’
প্রতিমন্ত্রী
বলেন, ‘উপাসনালয়ে এসি ব্যবহার হচ্ছে। এখানে সাশ্রয়ী হওয়া উচিত। শুধু
নামাজের সময় ব্যবহার করে পরে যেন বন্ধ করে দেয়া হয়। সরকারি অফিসে যেন
যত্রতত্র এসি ব্যবহার না করা হয়। যত বেশি অনলাইন মিটিং করা যায়।’
তিনি
বলেন, ‘সন্ধ্যা ৮টা থেকে দোকানপাট, শপিংমল ও যেকোনো আলোকসজ্জা বন্ধ থাকবে। এ
বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে কঠোর হতে বলা হয়েছে। সিদ্ধান্ত না মানলে বিদ্যুৎ
সংযোগ কেটে দেয়া হবে।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের
অন্যতম অনুষঙ্গ জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সূচি অনুযায়ী লোডশেডিং
দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানিয়েছে সরকার।
দিনে এলাকাভিত্তিক
সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে। এই ঘোষণা অনুযায়ী
বিদ্যুৎ কখন কোথায় লোডশেডিং হবে- সেই সূচি নির্ধারণ করেছে বিতরণ
সংস্থাগুলো, যা কার্যকর হতে যাচ্ছে মঙ্গলবার।
জ্বালানি তেল ও গ্যাসের
আমদানি মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সরকার রয়েসয়ে বিদ্যুৎ
উৎপাদনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বিদ্যুতের যাওয়া-আসার স্মৃতি ফিরিয়ে
এনেছে।
কয়েক বছর ধরে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের অভ্যাসের কারণে বিদ্যুতের
যাওয়া-আসা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, সামাজিকমাধ্যমে অসন্তোষের কথা তুলেও ধরছেন
হাজারো মানুষ।
সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের
উচ্চমূল্য, বিশেষ করে এলএনজির দামে লাফ, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কয়লা
সরবরাহে বিঘ্নের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমাতে হয়েছে।
পাওয়ার সেলের
তথ্যানুযায়ী, দেশে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। সেই জায়গায়
উৎপাদন হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত।
জ্বালানি তেলের দাম
বেশি বলে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও পূর্ণ সক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং কোভিড-পরবর্তী চাহিদা বাড়ায় আগামী কয়েক মাসে
আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়তির দিকে থাকবে বলেই পূর্বাভাস
আছে।
গত এক যুগে বিদ্যুৎ খাতে নানা পদক্ষেপের পরও বিদ্যুৎ উৎপাদনে
ঘাটতির কারণে লোডশেডিং ফিরে আসার পর অসন্তোষের মধ্যে গত ৫ জুলাই এই সংকটের
কারণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওইদিন সরকারপ্রধান বলেন,
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাসসহ বিদ্যুৎ
তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে পরিবহনব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি
হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেই বিদ্যুতের জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে।