Published : Tuesday, 19 July, 2022 at 11:06 AM, Update: 19.07.2022 1:09:43 PM
রীতিমতো অবিশ্বাস্য। ছিলেন মামলার সাক্ষী। হতে যাচ্ছেন ঘাতক। খুন করে নাটকীয়ভাবে এলাকা ছেড়ে থাকা সাজিদ কুমিল্লার দেবিদ্বারে ঈদ উল আযহার আগের দিন মেহেদী হাসান শান্ত হত্যায় একাই জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। ঘটনার দুই প্রত্যক্ষদর্শী ও ছুরিকাঘাতে আহত রাসেল (৩০) ও আশরাফুল ইসলাম (১৭) সোমবার আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। আহত রাসেল নুরপুর গ্রামের মৃত মোতালেব মিয়ার ছেলে ও আশরাফুল ওই একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। জবানবন্দীতে রাসেল ও আশরাফুল জানায় ,‘ধারালো ছোরা হাতে আমেরিকা প্রবাসী আজমুল ফুয়াদ সাজিদ (২৩) যখন এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে যাচ্ছিল তখন তাকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে খুন হয় মেহেদী হাসান শান্ত। পুরো কিলিং মিশন শেষ হয় এক মিনিটের মধ্যেই। পরে ঘাতক সাজিদ মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।’ কিন্তু হত্যার মামলায় সাজিদকে আসামি না করে সাক্ষী করা হয়। জবানবন্দী রেকর্ড করেন আমলী আদালত ৪ এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা সুলতানা। রাতে জবানবন্দীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) খাদেমুল বাহার।
গত ৯ জুলাই বিকালে দেবিদ্বার উপজেলার নুরপুর গ্রামে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আমেরিকা প্রবাসী আজমুল ফুয়াদ সাজিদ এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত শুরু করলে তাকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হন একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগী শান্ত। এ সময় ছুরিকাঘাতে আহত হন আরও ৪ জন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জাকির হোসেন বাদী হয়ে পর দিন একই গ্রামের আল আমিন, সাদ্দাম, ছগির, বায়েজিদ, সিরাজ ও মোখলেছসহ ৬ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত রাসেল ও আশরাফুল আদালতে জবানবন্দী শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছোরা নিয়ে সাজিব ছুরিকাঘাত করে শান্তকে হত্যাসহ আমাদের আরও ৪ জনকে আহত করেছিল, এক মিনিটের মধ্যেই কিলিং মিশন শেষ করা হয়। এ ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে, কিন্তু সাজিবকে আসামি না করে মামলায় ৫ নম্বর সাক্ষী করা হয়।’ তারা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত হওয়ায় জবানবন্দীতে ঘটনার আদ্যপ্রান্ত তুলে ধরেছেন বলেও জানান। এছাড়াও ঘটনায় জড়িত না থাকলেও হত্যা মামলায় ২ নম্বর আসামি করা হয় ক্যান্সার আক্রান্ত সাদ্দাম হোসেনকে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বলেন, এ মামলায় এর আগে গত ১৪ জুলাই আদালতে অপর দুই আহত আরমান আলম ও নুরুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছিল। এ নিয়ে ৪ জনের আদালতে দেয়া জবানবন্দি ও স্থানীয়ভাবে তদন্তে শান্ত হত্যায় পলাতক সাজিদের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমান মিলেছে। সে (সাজিদ) একাই ছুরিকাঘাতে এ ঘটনা ঘটিয়ে ছিল। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তিনি আরও বলেন, এ মামলায় নিরোপরাধ কাউকে জড়ানোর চেষ্টা করছে কেউ কেউ। আসামী যুক্ত করতে আদালতেও আবেদেন করেছিল। কিন্তু আদালত বিষয়টি নামঞ্জুর করেছে।