ঈদের পরে দ্বিতীয় সপ্তাহে বেড়েছে মাছ, ডিম ও মুরগির দাম। আর এক সপ্তাহ আগের চেয়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজে বাড়তি গুনতে হচ্ছে পাঁচ টাকা। তবে গরু ও খাসির মাংস অপরিবর্তিত দামেই বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার কয়েকটি বাজার ঘুরে নিতপণ্যের বাজারে দর অদল বদলের এমন চিত্র পাওয়া যায়। বিক্রেতারা জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের মাছ কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে।
আকার ভেদে রুই মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে শিং ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, শোল ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, আইড় মাছ ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট আকারের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং মাঝারি ও বড় আকারের ইলিশ এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে নদী বা হাওরের মাছের দাম দোকান ভেদে এর চেয়ে বেশি রাখা হচ্ছে।
মালিবাগ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী কাউসার আহমেদ জানান, আড়তেই মাছের দাম চড়া। ঈদের পর সরবরাহ কমেছে। আর ঈদ শেষে ফেরার পর প্রায় সবাই বাজারে গিয়ে সর্বপ্রথম মাছ কিনছেন। এতে চাহিদা বাড়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় ডিমের দাম ডজনে আরও ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
শুক্রবার প্রতি ডজন ফার্মের লাল ডিম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা। সাদা ডিম ১২০ টাকা এবং প্রতি হালি হাঁস ও পাকিস্তানি মুরগির ডিমের দাম নেওয়া হচ্ছে ৬০ টাকা।
গত সপ্তাহ প্রতি ডজন লাল ডিম ছিল ১২০ টাকা ও সাদা ডিম ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে হাঁস ও পাকিস্তানি মুরগির ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
শান্তিনগর বাজারের ভাই ভাই ব্রয়লার হাউসের দোকানি ইমরান হোসেন বলেন, “ঈদের পর থেকেই ডিমের দাম বেড়েই চলেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমে কমপক্ষে ৫ টাকা বেড়েছে।”
তেজগাঁওয়ের জিলানী মার্কেটের ইসলামী ট্রেডার্সের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী মো. ইসলাম বলেন, “শাক-সবজির দাম যখন বাড়তি থাকে তখন ডিমের ওপর এর প্রভাব পড়ে। বাজারে যেহেতু এখন সবজির দাম বেশি সে কারণে ডিমের দামও বাড়তি। তবে গতকালের (বৃহস্পতিবারের) চেয়ে আজকে দাম কিছুটা কমেছে। আগামীকাল থেকে বাজারে ডিমের দাম কিছুটা কমে পাওয়া যাবে।”
তিনি জানান, ১০০ ফার্মের ডিম ৮৫০ থেকে ৮৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের পর এই দাম কিছুটা উঠানামা করছে।
এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার ও সোনালী মুরগি কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ১৫০ টাকা। অপরদিকে সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৭৫ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে।
রামপুরা বাজারের খুচরা মুরগি ব্যবসায়ী আব্দুল আলীম জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে।
কাপ্তান বাজারের পাইকারি মুরগি ব্যবসায়ী মেসার্স ওমর ফারুক ট্রেডার্সের মালিক ওমর ফারুক বলেন, “মুরগির চাহিদা বেড়েছে। খামারেন এখনকার দর গত সপ্তাহের চেয়ে বেশি। এই কারণে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়েছে।”
অপরদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়েছে বলে দোকানিরা জানিয়েছেন।
রামপুরা বাজারের তাহের স্টোরের মালিক আবু তাহের জানান, দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের ছিল ৪৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে একই দামে।
“আজকে পাইকারি দরই পড়েছে ৪৭ টাকা, আমাদের তো ৫০ টাকার কমে বিক্রি করলে লস হয়ে যাবে।”
এদিকে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে মাংস ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
বাজার ভেদে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।