ইসমাইল নয়ন।।
সোনালী
আঁশ হিসেবে পরিচিত পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। এক সময়ে প্রচুর পরিমানে
পাটের চাষ করা হলেও এখন এ অনেক কৃষক পাট চাষ থেকে সরে দাড়াচ্ছেন। প্রায়
একযুগ আগেও দুই ফসলী জমিগুলো আলু, সরিষা, গমসহ অন্যান্য রবিশস্যের আবাদের
পরেই এসব জমিতে পাটের চাষ বীজ বপন করতের কৃষক। বর্ষায় নৌকা বোঝাই করে এসব
শুকনো পাট নেওয়া স্থানীয় হাটবাজারে। এছাড়া অসংখ্য কৃষক পরিবারের
রান্না-বান্নার জ্বালানী ও ঘরের বেড়া তৈরীর কাজে পাট খড়ির ব্যবহার হতো।
বিভিন্ন কারণেই বুড়িচং - ব্রাহ্মণপাড়ার কৃষকরা পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে
নিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার দুলালপুর, বালিনা,পোমকাড়া,
বেড়াখোলা,দীর্ঘিরপাড়,চান্দলা, সিদলাই, কান্দুঘর, মাধবপুর, মকিমপুর,
ষাইটশালা, মালাপাড়া, জিরুইন, সাহেবাবাদ এবং বুড়িচং উপজেলার জগতপুর,সামপুর,
লড়িবাগ, পূর্নমতি, পীরযাত্রাপুর, সহ অন্যান এলাকায় কিছু জমিতে এখনও পাটের
চাষাবাদ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বর্ষার পানি জমিতে তেমন দেখা যায়নি। পানি
বিহীন জমিতে নেমে পাট কাটতে দেখা গেছে শ্রমিকদের। এ মৌসুমে কোন কোন ইউনিয়নে
কিছু পরিমাণ জমিতে পাটের দেখা মিললেও অসংখ্য জমি ফাঁকা থাকতে দেখা গেছে।
আগের মত মাঠ জুড়ে পাট ক্ষেতি না থাকায় এখানকার কৃষক ও শ্রমিকদের মধ্যে পাট
নিয়ে তেমন কোন কর্ম ব্যস্ততা দেখা যায়নি। লক্ষ্য করা যায়, কাটা পাট আটি
বেঁধে পঁচানোর জন্য পানিতে ডুবিয়ে রাখা হচ্ছে। এবং কিছু ইউনিয়নের সমান্য
পরিমাণ পাট থেকে আঁশ ছড়াতে দেখা যাচ্ছে, এ ছাড়া এ বছর তেমন পানি না থাকায়
পাট পচাতে কৃষকের নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। ক’দিন পরেই পাটখড়ি থেকে আঁশ
আলাদা করা হবে।
স্থানীয় কৃষক পোমকাড়া গ্রামের আবদুল মান্নান জানায়,
বিভিন্ন কারণেই পাট চাষ থেকে সরে আসছেন। কারণ হিসেবে তারা বলেন, আবহাওয়া
জলবায়ুর পরিবর্তণ, অতিখরা ও অসময়ে ঝড়বৃষ্টি, বর্ষার পানি আসা যাওয়ার
ধারাবাহিকতা না থাকা, এ চাষে ব্যাপক খাটা খাটোনী শেষে পাটের কাঙ্খিত মূল্য
না পাওয়া ইত্যাদি কারণেই পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এ বছর উৎপাদীত প্রতিমণ
পাটের (মুন অনুযায়ী) ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন জানান
তারা।
ব্রাহ্মণপাড়া উপ সহকারী কৃষি অফিসার শামীমুল ইসলাম ভূইয়া জানান,
এক সময় এ উপজেলায় পাটের ব্যপক আবাদ হত, কিন্তু কয়েক বছর যাবত পাট আবাদের
প্রতি কৃষক একেবারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল, বর্তমানে পাটের দাম বৃদ্ধি
পাওয়ায় কৃষক উপজেলার কিছু কিছু যায়গায় পাটের আবাদ করছে। তিনি আরো বলেন এ
বছর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পাট চাষে লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে।