দেবীদ্বারে জাতীয় মৎস সপ্তাহ পালিত
Published : Monday, 25 July, 2022 at 12:00 AM
এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
দেবীদ্বারে মৎস্য সপ্তাহ পালন উপলক্ষে র্যালি আলোচনা সভা ও মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। ‘নিরাপদে মাছে ভরব দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেবীদ্বারে মৎস্য সপ্তাহ পালন উপলক্ষে রোবার সকাল সাড়ে ১০টায় একটি র্যালি, উপজেলা পরিষদ চত্তরে পরিদর্শন শেষে উপজেলা পরিষদ পুকুরে রুই, কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ৩০ কেজি মাছের পোনা অবমুক্ত এবং বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ হল রোমে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ গিয়াস উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এবং মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বলাই চন্দ্র ভৌমিকের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রৌফ, সাবেক সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ নাসির আহম্মেদ ভূঁইয়া, সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, উপজেলা খামার ব্যবস্থাপক মোঃ মামুনুর রশিদ, মৎস্য চাষি আমিনুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান। স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন উপজেলা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুব্রত গোস্বামী।
আলোচকরা বলেন, দেশ এখন মাছে-ভাতে সয়ংসম্পূর্ণ। এখন আমরা দেশীয় উৎপাদিত মাছ বিদেশে রপ্তানী করতে পারি। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মাছ হবে আমাদের দেশের দ্বিতীয় রপ্তানীযোগ্য অর্থকারী ফসল। আমরা সেলক্ষে এগিয়ে যাচ্ছি।
এক সময় সারা দেশের খাল ও বিলে মিঠা পানির আড়াইশ প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে এ সংখ্যা ২১০-এ দাঁড়িয়েছে। ৪০ প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তির তালিকায়। দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার, ফসলি জমিতে অপরিকল্পিত কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয় দূষণ, নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাস, উজানে বাঁধ নির্মাণ, নদী সংশ্লিষ্ট খাল-বিলের গভীরতা কমে যাওয়া, ডোবা ও জলাশয় ভরাট করা, মা মাছের আবাসস্থলের অভাব, ডিম ছাড়ার আগেই মা মাছ ধরে ফেলা, ডোবা-নালা পুকুর ছেঁকে মাছ ধরা, বিদেশি রাক্ষুসে মাছের অবাধ চাষ ও মাছের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটানো।
আলোচকরা আরো বলেন, ১৫-১৬ বছর আগেও তেমন একটা মাছ কিনতাম না। শুধু ইলিশ মাছ কিনতাম। মাছের প্রয়োজন হলে বাড়ির সামনের খালে বা নদীতে চলে যেতাম। খালে, পুকুরে তখন এত মাছ ছিল কেউ খালি হাতে নেমেও হাতিয়ে মাছ ধরতে পারতেন।
আলোচকরা আরো বলেন, জাল, ডালা, খুচন নিয়ে মাছ ধরতে নেমে যেত ছোট-বড় সবাই। কেউ কেউ হাতিয়ে মাছ ধরত। শোল, গজার, টাকি, চিংড়ি, শিং, কই, টেংরা, পাবদা, ফলিসহ বিভিন্ন জাতের মাছ ধরা পড়ত। তবে এখন পুকুরে চেলা, পুঁটি, বেলে ছাড়া কোনো মাছ নেই। এছাড়াও ধান পচে হাওরের পানিতে অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি হয়ে অক্সিজেন কমে যাওয়ার কারণেই মাছ মরে যাচ্ছে।