তানভীর দিপু:
জ্বালানি
তেলের দাম বাড়ার ঘোষণার পর কুমিল্লা থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার সব
যাত্রীবাহী সব পরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। দূরপাল্লার প্রতিটি পরিবহনেই
যাত্রী প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। হঠাৎ ভাড়া বৃদ্ধি
পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন সাধারণ যাত্রীরা। অপরদিকে শনিবার সকাল থেকে
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে যাত্রীবাহী যান চলাচল কমে গেছে।
বিভিন্ন স্ট্যান্ডের সামনে বাসের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।
শনিবার
সকাল ১০ টায় নগরীর শাসনগাছা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কুমিল্লা থেকে ঢাকার
ভাড়া আদায় করা হচ্ছে আড়াইশ টাকা। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত শাসনগাছা এশিয়া
পরিবহনের ভাড়া ছিলো দুশো টাকা।
নগরীর জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে
বিভিন্ন পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাসগুলো ডিজেলে চলে।
প্রতি লিটার ডিজেল ৩৪ টাকা বেড়ে যাওয়ায় এশিয়া এয়ারকন যাত্রীপ্রতি ৩ শ টাকা
নিচ্ছে। আগে ছিলো আড়াইশ টাকা। একদিনে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বাস ভাড়া।
এশিয়া
এয়ারকনের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের কিছু করার নেই। তেলের দাম
বাড়লে বাস ভাড়াও বাড়াতে হয়। আমরাতো আর ভর্তুকি দিয়ে বাস চালাতে পারি না।
এদিকে
তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় বন্ধ রয়েছে প্রিন্স সৌদিয়ায় বাস চলাচল।
প্রিন্স সৌদিয়ার ম্যানেজার টিপু সুলতান বলেন, আগে আমরা কুমিল্লা থেকে
চট্টগ্রামের ভাড়া নিতাম ২৬০ টাকা ভাড়া। শনিবার সকাল থেকে ৩০০ টাকা করে
নিচ্ছি। সকাল থেকে আমাদের ১০ টা গাড়ে ছেড়ে যায়। তবে চট্টগ্রামে আন্দোলনের
ফলে কুমিল্লার যাত্রীরা চট্টগ্রামে যেতে পারছে না।
বাস সংকট ও ভাড়া
বৃদ্ধির ঘটনায় যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। নগরীর জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডে এসে
দেখা যায় বহু যাত্রী বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন।
বাস্ট্যান্ডে এসে
অপেক্ষারত চট্টগ্রাম কলেজের স্নাতকের ছাত্রী কাজী নাজিয়া আক্তার বলেন, সকাল
১০ টায় এসেছি বাসস্ট্যান্ডে। এখনো কোন বাস পাচ্ছি না।
কুমিল্লা থেকে
ছেড়ে আসা রয়েল কোচের চালক জানান, গতকাল রাতের তেল ছিল। সেই তেলে সকালে বের
হয়েছি। দুপুরে কুমিল্লার আলেখারচর পাম্প থেকে নতুন দামেই তেল কিনতে হয়েছে।
কিন্তু যাত্রীরা তো ভাড়া বেশি দিবে না। নতুন ভাড়া নির্ধারণ করার পূর্ব
পর্যন্ত এভাবে চলতে হবে।
কুমিল্লা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি
হাজী আমির হোসেন জানান, কোন পাম্পে তেল দেয় নাই এমন ঘটনা নেই। বিশেষ করে গত
এক সপ্তাহ যাবৎ অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পেই অকটেন সরবরাহ কম ছিল। আজ থেকে
নুতন দামে বিক্রি করার অনুমতি আছে। তাই সকলেই নতুন দামে বিক্রি করছে।
কুমিল্লা
জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কবির হোসেন জানান, তেলের অস্বাভাবিক মূল্য
বৃদ্ধিতে অধিকাংশ গাড়িই স্ট্যান্ডে পড়ে আছে। নতুন দামে তেল কিনে পুরাতন
ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করলে প্রটি ট্রিপে ১৪-১৫শ টাকা লোকসান গুনতে হবে। নুতন
ভাড়া নির্ধারণ না করা হলে ডিজেল চালিত অধিকাংশ গণপরিবহনই বন্ধ থাকবে।