তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপিসহ কিছু দল ও প্রতিষ্ঠান জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর সপ্তাহব্যাপী আলোকচিত্র ও এলইডি প্রদর্শনী উদ্বোধনের সময় একথা বলেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে ও প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া সূচনা বক্তব্য দেন।
ড. হাছান বলেন, দেশে একটি মহল সবসময় বিভ্রান্তি ছড়ায়। পদ্মাসেতু থেকে যখন বিশ্বব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিলো তখন টিআইবি, সিপিডি এরা লাফিয়ে লাফিয়ে অনেক বক্তব্য দিয়েছে। বিএনপিও লাফিয়ে লাফিয়ে বক্তব্য রাখছিল, আর বিএনপির সঙ্গে সিপিডি, টিআইবি এরাও লাফাচ্ছিল। আজকে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে। আমাদের দেশে ডিজেলের মূল্য ১১৪ টাকা, কোলকাতায় সেটি ১১৬ টাকা অর্থাৎ কোলকাতার চেয়ে এখনো এখানে কম আছে। এই মূল্য বৃদ্ধির পরও বিপিসিকে প্রতি লিটার ডিজেলে ৮ টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ব্যক্তি যারা নিজেকে বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচয় দেয় আমিও তাদের বুদ্ধিজীবী হিসেবেই গণ্য করি। কিন্তু সময়ে সময়ে তাদের বুদ্ধি লোপ পায়, সময়ে সময়ে বিশেষ উদ্দেশ্যে তাদের বুদ্ধি ব্যবহৃত হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে কথাবার্তা বলছেন এটি জনগণকে বিভ্রান্ত করার শামিল। আমি আশা করবো তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার এই অপচেষ্টা থেকে বেরিয়ে আসবেন। যখন বিশ্ব বাজারে স্থিতিশীলভাবে জ্বালানি তেলের মূল্য কমবে তখন সরকার আবার মূল্য সমন্বয় করবে।
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে অন্যতম জঘন্যতম একটি হত্যাকাণ্ড। বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় তখন বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৫৪ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেই সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমরা ৮ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম কিন্তু ৯ শতাংশ আমরা এখনো ছুঁতে পারিনি।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল, কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডর পর পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের এবং রেডিও, টেলিভিশনসহ সব ক্ষেত্রে পাকিস্তানি ভাবধারা ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা হয়েছিল। তখন থেকে জাতি এক জায়গায় ঘুরপাক খেয়েছিল দীর্ঘ ২০ বছর। সেই অচলাবস্থা ভেঙেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে আবার সরকার গঠন করার মধ্য দিয়ে। ২০০৮ সালে সরকার গঠন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সাড়ে ১৩ বছরে যেভাবে এগিয়ে গেছে আজকে বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে একটি গর্বিত রাষ্ট্র।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি মনে করি বিএনপি আসলে বাস্তব পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেছে। কারণ ঈদের পরে, শীতের পরে, পরীক্ষার পরে, বর্ষার পরে আন্দোলনের কথা বলে বলে নিজেদের হাস্যকর বানিয়েছে। তাদের আন্দোলনে তাদের কর্মীরাও সাড়া দেয় না। এটি বুঝতে পেরেই তারা নতুন ঘোষণা দিয়েছে বলে আমি মনে করি।