Published : Wednesday, 17 August, 2022 at 12:59 PM, Update: 17.08.2022 1:02:59 PM
চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির মসজিদে বোমা হামলার ঘটনায় মামলায় পাঁচ জেএমবি সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আদালত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন। বুধবার (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল হালিম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা পাঁচ জেএমবি সদস্য হলেন– নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান, রমজান আলী, বাবুল রহমান ওরফে রনি এবং আবদুল মান্নানের বড় ভাই আবদুল গাফফার। তাদের মধ্যে চার জন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত থাকলেও ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন সাখাওয়াত হোসেন।
সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মনোরঞ্জন দাশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর ১০ মিনিটের ব্যবধানে চট্টগ্রামে ইপিজেড এলাকায় অবস্থিত নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে দুটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই মসজিদগুলোতে শুক্রবার স্থানীয়রাও নামাজ পড়তেন। ওই বিস্ফোরণে সামরিক-বেসামরিক মিলিয়ে মোট ২৪ জন আহত হন।
ঘটনার নয় মাস পর ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নৌবাহিনীর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে নগরীর ইপিজেড থানায় মামলা করেন। জেএমবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক রাইসুল ইসলাম খান নোমান ওরফে নাফিস ওরফে ফারদিনের নেতৃত্বে নৌঘাঁটির মসজিদে ওই আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন, বলকিপার আবদুল মান্নান ও রমজান আলী এবং বাবুল রহমান ওরফে রনিকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশের তদন্তে এবং গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল মান্নানের বড় ভাই জেএমবি সদস্য আবদুল গাফফারের সম্পৃক্ততায় পায় পুলিশ।
২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর পাঁচ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন ইপিজেড থানার পরিদর্শক মুহাম্মদ ওসমান গনি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে জুমার নামাজের সময় পতেঙ্গা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর দুটি বোমা নিক্ষেপ করেন আবদুল মান্নান। এ সময় মুসল্লিরা ছোটাছুটি শুরু করলে হামলাকারী আবদুল মান্নান ভিড়ের সঙ্গে মিশে যান। কিন্তু তাঁর বাঁ হাতের কবজিতে ইলেকট্রিক সুইচ দেখে মুসল্লিরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তখন আবদুল মান্নান আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করে সফল হননি। পতেঙ্গা মসজিদে হামলার ১০ মিনিট পর ঈশা খাঁ ঘাঁটির আরেকটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই মসজিদে জুমার নামাজ শুরু হলে রমজান আলী মসজিদের মাঝ বরাবর দুটি বোমা (গ্রেনেড) নিক্ষেপ করে মুসল্লিদের সঙ্গে মিশে যান। পরে তাকেও ধরে ফেলা হয়।
ফারদিন ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল বগুড়ার শেরপুরে গ্রেনেড বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হন বলে পুলিশ জানায়। এ কারণে তার নাম এ মামলার আসামি তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে মোট ২৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।