মো. হাবিবুর রহমান
ইভটিজিংয়ে বাধা দেওয়ায় বখাটের হামলায় আহত ফজলুল হক নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন শ্রীকাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফজলুল হক (৬৬) ওই গ্রামের মৃত ইবরাহিম মিয়ার ছেলে। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের মাতম বইছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শ্রীকাইল গ্রামের ফজলুল হক মেয়ে রাশিদাকে (৩১) প্রায়ই উত্যক্ত করতো একই গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে সায়মন হাসান (২৮)। বিষয়টি তার পিতা-মাতাকে জানালে সে আরো ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে। গত ২২ জুন রাশিদাকে পথরোধ করলে তার চিৎকারে বাবাসহ এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে তাদের উপর আক্রমন চালায়। এতে ফজলুল হকসহ ৩ জন আহত হলে তাদেরকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে গুরতর আহত ফজলুল হককে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অবস্থা আশংকাজনক দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে সে বাড়ি ফিরে আসে।
এ ঘটনায় ভিক্টিম রাশিদা বাদী হয়ে সায়মন হাসানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বাঙ্গরা বাজার থানায় এবং ফজলুল হক বাদী হয়ে কুমিল্লার নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালে ২টি মামলা করেন। ওই মামলায় আসামীরা জামিনে এসে মামলা তুলে নিতে একাধিকবার বাদী ও স্বাক্ষীদের প্রাণ নামের হুমকি দিয়ে আসছিল। তাদের সামজিক ও মানুষিক নির্যাতনে ফজলুল হক শনিবার দুপুরে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করলে তার স্বজনদের আর্ত চিৎকারে হাসপাতালে এক শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত ফজলুল হকের ছেলে সজিব মিয়া দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, আমার বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। বাবা চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রায়ই বলতো আমি বাঁচবো না। আমার বুকে খুব ব্যাথা হয়। বাবার কথাই ঠিক হলো। আমরা বাবাকে আর ফিরে পাব না।
নিহত ফজলুল হকের আরেক ছেলে আবদুর রহমান দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, অসুস্থ্য থাকাবস্থায় বাবা প্রায়ই আমাকে কাছে ডেকে নিয়ে বলতো মেয়েকে ইভটিজিং করার বিচার হয়তো আমি দেখে যেতে পারব না। তোরাতো আছিস, আমি মরে গেলেও তোরা সায়মনকে ছেড়ে দিস না। তার অত্যাচারে অনেক নারী লাঞ্চিত হয়েছে।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে জানান, তাঁর মেয়ের দায়ের করা মামলার চার্জশীট দেওয়া হয়েছে। অপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার এসআই ইকবাল হোসেন দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, ফজলুল হকের দায়েরকৃত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গত সপ্তাহে আদালতে পাঠানো হয়েছে।