Published : Thursday, 8 September, 2022 at 2:49 PM, Update: 08.09.2022 7:09:39 PM
কুমিল্লায় অগ্নিদগ্ধে নিহত কলেজ শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার মুনা’র মৃত্যুর পর পরিবারের দায়ের করা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন স্বামী সুমন সালাউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কুমিল্লা বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাজহারুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটক সুমন সালাউদ্দিন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হারং গ্রামের মরহুম মহসিন ভূইয়া’র ছেলে। ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিমনা সুমন সালাউদ্দিন জেলা জুড়ে সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিতি রয়েছে।
সুমন সালাউদ্দিন এর আইনজীবী মো. ইয়াছির আরাফাত রাজিব জানান, মামলাটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। তাহমিনা আক্তার মুনা মামলার একমাত্র আসামী সুমন সালাউদ্দিনকে ভালবেসে বিয়ে করায় পরিবার কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি। বিবাহের ছয়টি বছরেও তাদের কোন খোঁজ নেয়নি। প্রতিশোধ নিতেই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
আসামী সুমন সালাউদ্দিন আইনের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। ৭ সেপ্টেম্বর নিহত মুনার ভগ্নিপতি থানায় মামলা দায়ের করার পর মামলার একমাত্র আসামী সুমন সালাউদ্দিন আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আত্মগোপনে না থেকে পরদিন ৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হয়। সুমন সালাউদ্দিন সম্পূর্ণ নির্দোষ, বিজ্ঞ আদালত অবশ্যই ন্যায় বিচার করবেন এবং শীঘ্রই জামিন পাবেন।
এদিকে নিহতের ভগ্নিপতি তরিকুল ইসলাম এর অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সুমন সালাউদ্দিন এর কোন নির্ধারিত পেশা ছিল না। বেকার জীবন যাপন করে। প্রায়ই যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী মুনাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো। ৩০ আগস্ট রাত ১টায় মুনার শরীরের কেরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে সুমন সালাউদ্দিন। ওই ঘটনায় শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন থেকে ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মারা যায় কলেজ শিক্ষিকা তাহমিনা আক্তার মুনা। ১১ বোনের মধ্যে মুনা ১০ম। বাবা বেঁচে নেই, মা বৃদ্ধ। ভাই না থাকায় ভগ্নিপতি কুমিল্লা মহানগরীর ২নং ওয়ার্ড ছোটরা এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হারং গ্রামের বাসিন্দা সুমন সালাউদ্দিন ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারী ভালবেসে বিয়ে করে কুমিল্লা মহানগরীর রেইসকোর্স এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করতেন। স্ত্রী তাহমিনা আক্তার মুনা কুমিল্লা মডেল কলেজ এর বাংলা বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ৩০ আগস্ট অগ্নিদগ্ধের পর রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মৃত্যুর কাছে হার মেনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ওই কলেজ শিক্ষিকা। মৃত্যুর পর নিহতের ভগ্নিপতি তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে স্বামী সুমন সালাউদ্দিনকে অভিযুক্ত করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।