‘পারলে মেয়েদের ২ কোটি টাকা করে দিতাম’
Published : Wednesday, 21 September, 2022 at 12:00 AM
মেয়েদের
সাফ জয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের
(বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। একজন সংবাদকর্মী প্রশ্ন করলেন; আপনার
পক্ষ থেকে মেয়েদের কি দেবেন? হাসিমুখে সালাউদ্দিনের দুই শব্দের উত্তর,
‘দোয়া ও ভালোবাসা।’
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি জয়ের পরদিন মঙ্গলবার
ভাফুফে ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সালাউদ্দিন। যার অধিকাংশ
প্রশ্নই ছিলে মেয়েদের পাওয়া না পাওয়া নিয়ে। কেননা দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব
অর্জন করলেও মেয়েরা এখনো অনেক পিছিয়ে। নেই কোনো বেতন কাঠামো, হয় না কোনো
পেশাদার লিগ। সবকিছু মিলিয়ে যেন বঞ্চিতই সাবিনা খাতুন-সানজিদা আক্তাররা।
মেয়েদের
পাওয়া না পাওয়া নিয়ে সালাউদ্দিনের সব উত্তরই নির্ভর করছে যদি কিন্তুর উপর।
অর্থ্যাৎ টাকা থাকলে দিতেন, স্পন্সররা এগিয়ে এলে তবে দেবেন। বেতন কাঠামো
নিয়ে প্রশ্নে সালাউদ্দিনের উত্তর, ‘আমিতো পারলে প্রত্যেককে ২ কোটি টাকা করে
দিয়ে দিতাম। তবে সেটা সম্ভব না।’
এরপরেই সালাউদ্দিন বললেন স্পন্সরদের
কথা। তারা এগিয়ে এলে তবে মেয়েদের দেবেন, ‘আমরা স্পন্সর থেকে এখন যে অর্থ
পাচ্ছি সেটা দিয়ে মেয়েদের ভালোভাবে দেখভাল করছি। সামনে যদি আমরা আরও ভালো
স্পন্সরশিপ অ্যামাউন্ট পাই নিশ্চয়ই ওদের বেতন, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা
বাড়ানো হবে।’
মেয়েদের পুরষ্কারের ক্ষেত্রেও ঠিক একই অবস্থা। সেটি নির্ভর
করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার উপর। তবে তার বিশ্বাস অনেক কিছুই
পুরষ্কার পাবেন মেয়েরা।
কোনো পাঁচতারকা হোটেল নয়, বাফুফে ভবনের চারতলায়
গাদাগাদি করে থাকেন মেয়েরা। তাদের যাবতীয় সব খরচ বহন করে ফুটবল ফেডারেশন।
এর বাইরে তাদের কিছু সম্মানি দেওয়া হয়। ক্যাটাগরিভেদে সর্বোচ্চ ১২ হাজার
টাকা। বছরে মেয়েদের পেছনে বাফুফের খরচ হয় ৪ কোটি টাকার মতো। যা আসে স্পন্সর
প্রতিষ্ঠান থেকে।
যেগুলো পুরুষ ফুটবলের সঙ্গে তুলনা করলে নিতান্তই।
যেখানে পুরুষ ফুটবলে কোটি টাকা বছরে আয়ের সম্ভাবনা থাকে সেখান ১০-১২ হাজার
খুব কমই। তবে পুরুষ ফুটবলের সঙ্গে সমতায় যেতে চান না সালাউদ্দিন।
তার
ভাষ্য, ‘আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করেন ছেলেদের ফুটবলে বেতন অনেক বেশি মেয়েদের
কম কেন? কিন্তু ছেলে-মেয়েদের সমান বেতন তো হতে পারে না পৃথীবিতে। এমবাপ্পে
সাইনিং পায় ৩০ মিলিয়ন আর মেয়েদের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার পায় ৪
মিলিয়ন। এখানে পার্থ্যক থাকবেই।’
তবে মেয়েরা যে অবস্থায় এসেছে ফুটবল
খেলতে এখন তার চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছে বলে মনে করেন বাফুফের এই শীর্ষ
কর্তা, ‘এই মেয়েরা যখন প্রথম আসছে, তখন মেয়েদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না।
আজকে ঐ মেয়েগুলার কাছে বাসায় দুইটা তিনটা টিভি, চারটা মোবাইল,
ব্যাংক-ব্যালেন্স, জমি আছে। এগুলা ফুটবল খেলে হয়েছে। এই ইম্প্যাক্টটা ওরা
দেখেতেছে। ওদের দেখাদেখি নতুন মেয়েরাও আসবে।’
সালাউদ্দিনের আশা সাফ জয়ের
ফলে মেয়েদের আর্থিক উন্নতি হবে আরও। স্পন্সর প্রতিষ্ঠানে দ্বারে দ্বারে
ঘুরতে হবে না তাদের। অনেকে এগিয়ে আসবেন বলেও মনে করেন তিনি। এ ক্ষেত্রে
গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখার আহব্বানও জানান সালাউদ্দিন। তার মতে মেয়েরা ঠিকমতো
প্রচার পেলে স্পন্সরের অভাব হবে না। সঙ্গে ঘুচবে আর্থিক সঙ্কটও।