দৈনিক বাংলার সম্পাদক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সোমবার (৩ অক্টোবর) বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মেয়ে এষা খানের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে দশটায় দৈনিক বাংলার কার্যালয়ে প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তোয়াব খানের মরদেহে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে দুপুর ১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার মরদেহ নেওয়া হয়। সেখানে সাংবাদিকরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং জানাজার নামাজ আদায় করেন। বাদ আসর গুলশান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তোয়াব খানের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তোয়াব খানের মরদেহ বনানী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শরিফুজ্জামান পিন্টু, নিউজ বাংলার নির্বাহী সম্পাদক হাসান ইমাম রুবেল, আজকের পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক তোয়াব খানের ভাগ্নে সেলিম খান, তোয়াব খানের ছোটভাই ওবায়দুল কবীর খানসহ আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
গত শনিবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তোয়াব খান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
২০১৬ সালে একুশে পদক পাওয়া তোয়াব খানের সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। এরপর ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে। দেশ স্বাধীনের পর দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তোয়াব খান। ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি তিনি দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান। সে সময় তার আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পিণ্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান।
দৈনিক জনকণ্ঠের শুরু থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি। এরপর নতুন আঙ্গিক ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।