Published : Sunday, 16 October, 2022 at 12:00 AM, Update: 16.10.2022 12:58:19 AM

তানভীর দিপু:
নিষেধাজ্ঞা
থাকা সত্ত্বেও ট্রেনের ছাদে ভ্রমন করতে গিয়ে ছিটকে পড়ে কুমিল্লায় আবারো এক
যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকালে সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর
এলাকায় বৈদ্যুতিক তারে লেগে কর্ণফুলি এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে ছিটকে পড়ে
৬ তরুণ, এর মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেবার পথে মৃত্যুবরণ করেন
আদনান সামি নামে একজন; সে নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের কিনারা
গ্রামের রহমত উল্লার ছেলে। অপর ৫ জনের মধ্যে গুরুতর আহত ২ জন কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো
হয়েছে, অপর তিনজন কুমিল্লায় চিকিৎসা নিয়েছে। ছিটকে পড়া ৬ জনের মধ্যে দুই
জন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবার কুটি এলাকার ফল ব্যবসায়ি। নিহত সামিসহ অপর
চারজন বন্ধু, তারা শুক্রবার কুমিল্লা শহরের দিকে ঘুরতে গিয়ে ট্রেনে করে
নাঙ্গলকোট ফিরছিলো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ঢালুয়া ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন।
রেলওয়ে
পুলিশ কুমিল্লার লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ট্রেনের ছাদে
ভ্রমন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এজন্য সংশ্লিষ্ট রেল কর্মকর্তারাও দায়ী হবার
বিধান রয়েছে।
তবে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শনিবার ওই শিক্ষার্থীরা এবং
ফল ব্যবসায়িরা ছাদে চড়ছিলো কিভাবে এমন প্রশ্নর জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা জসিম
উদ্দিন জানান, রেলওয়ে পুলিশের জনবল কম, সব সময় পর্যবেক্ষণ সম্ভব হয় না।
যখনই ট্রেনের ছাদে যাত্রী দেখি, তাদের নামিয়ে দেই। স্টেশন পার হলে তারা
আবারো উঠে যায়। এখানে যাত্রীদের সচেতন হতে হবে।
এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর
সোনার বাংলা ‘টাকার জন্য’ তিন কিশোর যুবককে ট্রেনের ছাদ থেকে কুমিল্লার
লালমাই উপজেলার বাগমারা এলাকায় ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে পর দিন ১৩
সেপ্টেম্বর আবু সায়েম নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আহত হয়ে
কুমিল্লা মেডিকেলে চিকিৎসা নেয় সাদ আহমেদ ও পলাশ মিয়া নামে দুই যুবক।
তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার যশদল ইউনিয়নে।
সে সময় আহতরা পুলিশকে জানায়,
শনিবার রাতে একটি ট্রেনের ছাদ উঠে কিশোরগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম চলে যান তারা।
রোববার বিকালে তারা চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে সোনার বাংলা
ট্রেনের ছাদে উঠে পড়েন। ওই সময়ে ট্রেনের ছাদে ওঠেন আরও কয়েকজন দুর্বৃত্ত।
ট্রেন চলতে শুরু করলে দুর্বৃত্তদের দুইজন তাদের কাছে এসে টাকা দাবি করে। এ
সময় তাদের কাছে কিছু নেই বলে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে দুর্বৃত্তরা
ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে লাকসাম রেলওয়ে জংশন পার হয়ে লালমাই উপজেলা
অংশে প্রবেশ করলে দুর্বৃত্তরা একে একে তিনজনকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয়।
গত
শুক্রবার ট্রেনের ছাদ থেকে ৬ জন পড়ে আহত হবার ঘটনায় কুমিল্লা রেলস্টেশন
পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুর রহমান জানান, কুমিল্লা স্টেশন ছেড়ে যাবার সময়
ছাদে কেউ ছিলো না। তারা কখন ছাদে উঠলো তা তদন্ত করে দেখতে হবে। তিনি জানান,
ট্রেনের ছাদে চড়ে যাবার সময় উপর থেকে একটি বৈদ্যুতিক তার লেগে তারা ছিটকে
পড়ে যায় এবং গুরুতর আহত হয়।