
রাজবাড়ীতে স্বজনদের দেখতে এসে আদালত চত্বরে প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে সোনার দুল খুইয়েছেন এক নারী।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ীর আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নারীর নাম নাছিমা বেগম। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাচুরিয়া কোনাইলের হানিফ মল্লিকের স্ত্রী।
নাছিমা বেগমের ভাষ্যমতে, তার ভাই একটি মামলায় কারাগারে আছেন। সোমবার (১৭ অক্টোবর) তার ভাতিজা নাঈমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তার আদালতে তোলার কথা ছিল। এ কারণে তিনিসহ দুজন আদালতে তাকে দেখতে এসেছিলেন।
হঠাৎ বয়স্ক এক ব্যক্তিসহ দুজন এসে জিজ্ঞাসা করেন, কী কারণে আদালতে এসেছেন। তিনি বলেন, তার ভাতিজাকে দেখতে এসেছেন এবং তার ভাই কারাগারে আছেন। এ সময় ওই ব্যক্তি বলেন, একটি কাজ করলে আপনার ভাই তিনদিনের মধ্যে জামিন পাবে। কিন্তু কাউকে কিছু বলা যাবে না। আর তিনি একটি পাথর পড়ে দেবেন। সেই পাথরের গুনে তিনদিনের মধ্যে জামিন পাবে।
তখন তাকে ১০ টাকা দিতে বলেন ওই ব্যক্তি। সেই টাকা পড়ে দিয়ে আঁচলে বাঁধতে বলেন। সরল বিশ্বাসে তার কথায় টাকা আঁচলে বেঁধে ওই ব্যক্তির কথামতো চলতে থাকেন নাছিমা বেগম। একপর্যায়ে তার সঙ্গে সঙ্গে যেতে বলেন।
কিছু দুর নিয়ে এক ব্যক্তি তাকে ফুঁ দেন। এবং অন্যজন তার কানের দুল খুলে হাতে নেন। পরে কানের দুল ও ৫০ টাকা পড়ে নেওয়ার কথা বলে ওই নারীকে আদালতের মূল গেটের বাইরে আনা হয়। তখন তারা বলেন, চার খাম্বার (পিলার) নিচে একটি নীল আছে। সেটি নিয়ে এলে তিনদিনের মধ্যে তার ভাই জেল থেকে ছাড়া পাবেন।
তাদের কথামতো শহরের বড়পুল এলাকায় চার খাম্বার নিচে গিয়ে কিছুই না পেয়ে ফিরে এসে কাউকে দেখতে পাননি নাছিমা বেগম।
দেলোয়ার শেখ, আলামিন মিয়া ও খোকন মাহমুদসহ কয়েকজন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে রাজবাড়ীতে এই চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু প্রশাসন কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। শহরের রেলগেট, বাজার, কোর্ট চত্বর, বড়পুল, মুরগি ফার্ম ও কলেজ এলাকায় এদের আনাগোনা। এরা এমন কিছু করেন যার প্রভাবে ভুক্তভোগীরা তাদের সঙ্গে থাকা সবকিছু প্রতারকদের দিয়ে দেন।
রাজবাড়ী ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণ বন্ধুচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ঘটনাগুলো নিয়ে তারা কাজ করছেন। আশা করছেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে চক্রটি শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পারবেন। তবে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখানো ব্যক্তিদের থেকে সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। এ ধরনের কাউকে দেখলে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।