ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
জীবন বাঁচাতে মায়ের কিডনি দান, তবুও বাঁচলো না ছেলে
Published : Wednesday, 19 October, 2022 at 8:38 PM
জীবন বাঁচাতে মায়ের কিডনি দান, তবুও বাঁচলো না ছেলেচট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ছেলের দুটি কিডনি বিকল থাকায় নিজের একটি কিডনি দিয়ে দেন তার মা। অবশেষে আট মাস সুস্থ থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই ছেলের মৃত্যু হয়েছে। কিডনি দিয়েও ছেলেকে বাঁচাতে না পেরে এখন ওই মায়ের আহাজারি যেন থামছেই না।
জানা গেছে, ওই মায়ের নাম ছলিমা বেগম (৪০)। বড় ছেলে কলেজশিক্ষার্থী মুহাম্মদ ইমনকে (২০) বাঁচাতে তিনি তার একটি কিডনি দিয়েছিলেন। কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের আট মাস পর ইমন মারা গেছেন। রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সুফিপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ি।

ইমনের স্বজনরা জানান, ২০২০ সালে চট্টগ্রামের বাইতুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় (এসএসসি) জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন ইমন। ভর্তি হন রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজে। ওই বছরে অসুস্থতা অনুভব করেন ইমন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নেয়া হয় ভারতের অ্যাপোলো আন্তর্জাতিক হাসপাতালে। ভারতীয় চিকিৎসকেরা জানান, বিকল হওয়া দুটি কিডনির মধ্যে একটি কিডনি দ্রুত প্রতিস্থাপন করতে হবে। এ কথা শুনে ছলিমা বেগম ছেলেকে বাঁচাতে একটি কিডনি দিয়ে দেন। কিডনি প্রতিস্থাপন করে ছেলেকে দেশে নিয়ে আসেন তিনি।

স্বজনেরা আরো জানান, কিডনি প্রতিস্থাপনের আট মাসের মাথায় আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন ইমন। তাকে রাঙ্গুনিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে ইমন মারা যান। বুধবার সকাল ১০টার দিকে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়।

ইমনের মামা চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গাজী মো. এনাম জানান, ইমন খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা নিতে গিয়ে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। ভারত থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে এসে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছিলেন। হঠাৎ আবার অসুস্থ হয়ে যান। রাঙ্গুনিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।