
গত কয়েকদিনে চাল-আটাসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মতো অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের চিনির বাজার। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। সরকার দাম ঠিক করে দেওয়ার পরও তিন থেকে চার দিনের ভেতরে চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বিষয়টি তদারকি করতে বিশেষ অভিযানে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার চকবাজার ও রাজগঞ্জ এলাকায় অতিরিক্ত মূল্যে চিনি বিক্রি করায় তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
এ অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মো: আছাদুল ইসলাম।
তিনি জানান- শনিবার কুমিল্লা মহানগরীর চকবাজার ও রাজগঞ্জ এলাকায় ভাউচার না রেখে সরকার নির্ধারিত রেটের অতিরিক্ত মূল্যে চিনি বিক্রি করায় চকবাজার এলাকার মেসার্স দিলীপ সাহাকে ৩ হাজার টাকা এবং একই অভিযোগে পঙ্কজ এন্টারপাইজকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে আমদানিকারকের স্টিকারবিহীন বিদেশী পণ্য ইচ্ছেমাফিক দামে বিক্রি করায় জনতা স্টেশনারিকে ৬ হাজার টাকা জরিমানাসহ মোট তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা জানান, শনিবার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তিনটি টিম নেমেছে। বিশেষ করে চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান-মিল ও পাইকারী বাজারে এসব অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভোক্তা অধিদপ্তরের টিমগুলো।
চলতি মাসের শুরুতে খুচরা বাজারে খোলা চিনি বিক্রি হয় ৮৪ টাকা করে। স্থানীয় পরিশোধনকারী মিলগুলোর উৎপাদন খরচ বিবেচনায় নিয়ে সরকার গত ৬ অক্টোবর কেজিতে দাম ছয় টাকা বাড়িয়ে দেয়। এতে খোলা চিনির দাম হয় ৯০ টাকা। যা বর্তমানে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিনির দাম গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকার দাম ঠিক করে দেওয়ার পরও তিন থেকে চার দিনের ভেতরে চিনির দাম ফের কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, তিন থেকে চার দিন আগে চিনি ৯৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি। সেটা এখন ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। বস্তা প্রতি চিনির দাম এক হাজার ৫০ টাকা বেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনদিন আগে মঙ্গলবার ৫০ কেজির চিনির বস্তার দাম ছিল ৪২৫০ টাকা, সেটি গতকাল শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৫৩০০ টাকা দরে। অর্থাৎ বস্তাপ্রতি ১০৫০ টাকা বেড়েছে। ফলে খুচরা ব্যবসায়ীদের ১০৬ টাকা করে কিনে ১১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
দাম বাড়িয়ে নির্দিষ্ট করার পরও কেজিপ্রতি চিনির দর ২০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
হঠাৎ চিনির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে চায়ের দোকানে। দোকানিরা এক কাপ চা ৫ থেকে ৬ টাকা বিক্রি করলেও চিনির দাম বাড়ায় সেটি ৮ থেকে ১০ টাকার বিক্রি করা হচ্ছে।