ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
অবৈধ দখলদারমুক্ত করতে মাঠে প্রশাসনের প্রশংসা কুড়িয়েছে উচ্ছেদ অভিযান
তানভীর দিপু
Published : Saturday, 9 January, 2021 at 6:34 PM
অবৈধ দখলদারমুক্ত করতে মাঠে প্রশাসনের প্রশংসা কুড়িয়েছে উচ্ছেদ অভিযানকুমিল্লা নগরীতে ব্যস্ততম এলাকার রাস্তাঘাট, ফুটপাত ও বাজার এলাকাগুলো থেকে অবৈধ দখলদার উ”েছদ করতে গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে একটানা ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে যা”েছ জেলাপ্রশাসনের টীম কুমিল্লা। বিশেষ করে ফুটপাত এবং নগরীর ব্যস্ততম সড়কগুলো থেকে অবৈধ দখলদার, হকার এবং দোকানপাট উ”েছদে ইতিমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে এই কার্যক্রম। উ”েছদের পাশিপাশি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করে অনেককে সতর্কও করা হ”েছ যেন আর কেউ দি¦তীয়বার এই কাজ না করে। কুমিল্লার সাধারণ নাগরিকরা এই চান এই নগরীর সৌন্দর্য্য এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় অব্যাহত এই কার্যক্রম চলমান থাকুক। এছাড়া সুশৃঙ্খল পরিবেশ যেন সব সময় থাকে সেজন্য দীর্ঘ মেয়াদী ব্যব¯’া গ্রহনের জন্য দাবি জানান নগরবাসী।  
কুমিল্লা জেলাপ্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীরের নির্দেশনায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবু সায়িদ এর নেতৃত্বে এপর্যন্ত নগরীর ষ্টেশন রোড, শাসনগাছা, টমছমব্রীজ, রানীর বাজার, রাজগঞ্জ, চকবাজার, কান্দিরপাড়সহ নগরীর সকল ব্যস্ততম এলাকায় এই অবৈধ দখলদার উ”েছদ অভিযান পরিচালনা করেছেন জেলাপ্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণের দল টীম কুমিল্লা।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবু সায়িদ জানান, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে জেলাপ্রশাসকের নিবিড় তত্ত্বাবধানে আমরা কাজ করে যা”িছ। কুমিল্লার ফুটপাত ও জনগুরুত্বপূর্ন এলাকাগুলোতে শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য্য ফেরাতে যে নগরবাসী যেভাবে সাড়া দি”েছ আমরা তাতে খুব খুশি। এই কাজ করতে গিয়ে শুভে”ছাসরূপ আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে কড়তালির অভিনন্দনও পেয়েছি।
তিনি আরো জানান, আমরা যাদেরকেই এই উ”েছদের আওতায় আনছি তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য জায়গা দেখিয়ে দি”িছ। আমরা চাইনা- ছোট ব্যবসায়ি বা হকাররা ক্ষতিগ্র¯’ হোক। আমাদেরকে সিটি কর্পোরেশন, জেলাপুলিশ ও আনাসার বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সহযোগিতা করছেন।
জেলাপ্রশাসন শুরুতে এই কাজ এককভাবে শুরু করলেও পরে এতে যোগ দেয় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরাও। সিটি মেয়র মোঃ মনিরুল হক সাক্কু টীম কুমিল্লাকে দখলদার উ”েছদ অভিযানের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়া তিনি জানান, এই কার্যক্রমের ফল দীর্ঘদিন যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারে সেজন্য সিটি কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট থাকবেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা ষ্টেশনরোডের রাস্তার পাশ দখল করে কেউ আর আগের মত মালামাল রাখছে না। আগে এই এলাকাটিতে লোহার এবং ভাংগাড়ি ব্যবসায়িরা তাদের অতিরিক্ত পণ্য রাস্তার উপর রেখেই দীর্ঘদিন ব্যবসা করেছে।
রাজগঞ্জ থেকে চকবাজার রাস্তার পাশে ফুটপাতের উপর কেউ যেন কোন ধরনের পণ্য রেখে ব্যবসা না করতে পারে এজন্য নির্দেশনার পর ফুটপাতের উপর থেকে মালামাল ও ছাউনি গুটিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়িরা।
রাজগঞ্জ বাজারের পূর্ব গেইট এবং দক্ষিণে ফলবাজারের গেইটে ফুটপাত উদ্ধারে যে উ”েছদ অভিযান তাতেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালতের টীম।
টমছমব্রীজ এলাকায় রাস্তার উপর থেকে কাচা বাজার উ”েছদ এবং পথচারী চলাচলে জায়গা থেকে বিভিন্ন দোকানপাট ¯’াপনা উ”েছদ করে এলাকাটিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে সক্ষম হয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।  
এদিকে সর্বশেষ কান্দিরপাড় লিবার্টি মোড় ও টাউন হল মাঠ থেকে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চা দোকান ও হাকারদের উ”েছদ করা হয়েছে। শহরের সৌন্দর্য্য রক্ষায় এই কার্যক্রমকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে সাধুবাদ জানিয়েছেন নগরবাসী।
কান্দিরপাড় এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ি একাধিক ব্যাক্তি জানান, আমরা চাই এই কাজ অব্যাহত থাকুক। তবে এজন্য যেন ক্ষতিগ্র¯’ না হয়। নগরীর সৌন্দর্য্য রক্ষায় ফুটপাত, শপিংমল ও বাজারের সামনে থেকে অবৈধ ভাবে দখল করে গড়ে ওঠা দোকানপাট ও হকারদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে সরিয়ে নিলে কুমিল্লা নগরীর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে। তবে প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত দীর্ঘদিন যে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এজন্য সাধুবাদ জানাই।
ছাতিপট্টি এলাকার বাসিন্দা শারমিন ইসলাম জানান, আগে রাজগঞ্জ থেকে চকবাজার পর্যন্ত যে ফুটপাত আছে সেখানে হাঁটলে আশেপাশের দোকানপাটের মালামালের সাথে ধাক্কা খেতে হত। কোন কোন জায়গায় ফুটপাত থেকে নেমে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হত। মোবাইল কোর্ট দেয়ার পর থেকে ফুটপাতগুলো খালি হয়েছে।
কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্যাহ খোকন জানান, প্রশাসনকে অভিনন্দন যে তারা এই কার্যক্রম চালিয়ে যা”েছ। তবে এই কাজের ফল যেন মানুষ দীর্ঘদিন ভোগ করতে পারে এই ব্যব¯’া করতে হবে। এই কাজের জন্য জেলাপ্রশাসকে সার্বক্ষনিক আলাদা টীম গঠন করার দাবিও জানা”িছ।   
শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা নগরীর প্রধান সড়ক ও ভবনের সামনে দিনের পর দিন অবৈধভাবে দখল করে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো ছোট ছোট ব্যবসায়িসহ হকাররা। ভ্রাম্যমান হকাররা দিনের পর দিন রাস্তা দখল করে রাখার কারনে যানজট লেগে থাকতো নগরীর প্রধান সড়কে। ফুটপাতের পাশের ব্যবসায়িরা তাদের দোকানের অতিরিক্ত মালামাল ফুটপাতের উপর রাখার কারণে পথচারি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরী হয়েছিলো দিনের পর দিন।  এছাড়া শহরের মোড়গুলোতে কেউ কেউ দোকানপাট বানিয়ে প্রধান সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরীরও অভিযোগ ছিলো দিনের পর দিন। চলমান এই অবৈধ দখলদার উ”েছদ অভিযানের কারনে নিরসন হ”েছ এসব সমস্যা।