নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসে দেশে এক দিনে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত আট সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম। সবশেষ গত ১৪ নভেম্বর এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; সেদিন ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। শুক্রবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে মারা যাওয়া ১৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৭ হাজার ৭৩৪ জনের মৃত্যু হল।
২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৮৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ২০ হাজার ৬৯০ জন হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৮৩৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৬৫ হাজার ২৭৯ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ; তা ৫ লাখ পেরিয়ে যায় ২০ ডিসেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে ৮ কোটি ৮০ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮ লাখ ৯৮ হাজার।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৭তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৬তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৪টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৭টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৪০টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ১৮১টি ল্যাবে ১৩ হাজার ৬৮১টি নমুনা পরীা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীা হয়েছে ৩৩ লাখ ৩১ হাজার ৪৯১টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীা করা হয়েছে ২৬ লাখ ৩০ হাজার ৭৭২টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৭ লাখ ৭১৯টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ আর নারী ৩ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি এবং ১ জন করে মোট ২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ১২ জন ঢাকা বিভাগের, ২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ২ জন খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭ হাজার ৭৩৪ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৮৮০ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৮৫৪ জন নারী।
তাদের মধ্যে ৪ হাজার ২৩৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ১ হাজার ৯৫৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯০২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৮৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৯ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ৪ হাজার ২৬২ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৪২৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৪৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৩৯ জন খুলনা বিভাগের, ২৩৯ জন বরিশাল বিভাগের, ২৯৪ জন সিলেট বিভাগের, ৩৫০ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৭৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।