ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
চোখের পলকে বাবা-শিশুর রক্তে ভাসল রেললাইন
Published : Tuesday, 12 January, 2021 at 12:00 AM, Update: 12.01.2021 2:55:55 AM
চোখের পলকে বাবা-শিশুর রক্তে ভাসল রেললাইনতানভীর দিপু:
রেললাইনের পাশেই তাদের বাড়ি। অনেকেই হাঁটাচলা করেন এই রেললাইনের আশপাশ দিয়ে। বড়দের হাত ধরে শিশুরাও ঘুরতে বেরোয় বিকেলে। গতকাল সোমবার বিকেলেও বাবার হাত ধরে ৪ বছরের ছেলেটি বেরিয়েছিল ঘুরতে। বাবা গিয়েছিলেন পাশের একটি দোকানেই ছেলের জন্য চিপস্ কিনতে। আর সেসময়ই খেলার ছলে ছেলেটা কোন ফাঁকে উঠে পড়ে রেললাইনের ওপর, বাবা হয়তো খেয়াল করেননি। আর তখনই ঘটে হৃদয়বিদারক ঘটনাটি। হঠাৎ একটা ট্রেন এসে পড়ে কাছে। শব্দ শুনে বাবা চিৎকার দিয়ে ছুটে যান ছেলের দিকে। কিন্তু না, ততক্ষণে পিতা-পুত্রের রক্তে ভেসে যায় রেললাইন। দলা পাকিয়ে নিথর পড়ে থাকে দুটি তাজা প্রাণ। তারপর যেন চোখের জলের বান নামে নাঙ্গলকোটের বান নগর গ্রামে। মর্মবিদারক এই দুর্ঘটনার পর শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়ন। দুর্ঘটনাকবলিত স্থানে গিয়ে লাশগুলো দেখে চোখের পানি ফেলেছেন অনেকেই।
এলাকাবাসী জানান, মক্রমপুর ইউনিয়নের বাননগর উত্তরপাড়া এলাকায় রেললাইনের পাশেই মাহবুবুল হকের (৫২) বাড়ি। তার ৬ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট সন্তান  ৪ বছরের জিসান। গতকাল বিকালে জিসানকে নিয়ে রেললাইনের পাশে হাঁটতে যান মাহবুব। একসময় জিসান খেলার ছলে রেললাইনের উপর চলে যায়। একই সময় ঢাকাগামী মহানগর গোধূলী ট্রেন চলে এলে জিসানকে বাঁচানোর জন্য তার বাবা মাহবুবুল হক দৌড়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। একই সাথে ট্রেনের নিচে কাটা পরে মারা যায় পিতা-পুত্র।
মক্রমপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সোহাগ মিয়া বলেন, ‘আমি চিৎকার শুনে রেললাইনের পাশে গিয়ে এই ঘটনা দেখতে পাই। পরে পুলিশকে খবর দিই। এই এলাকায় রেললাইনের উপর একটি লেবেলক্রসিং থাকলেও এখানে কোনো গেট নেই। যে কারনে ট্রেন আসা-যাওয়ার কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায় না। যেহেতু রেললাইনের পাশে বাড়িঘর আছে, সেখানকার অনেক মানুষ রেললাইনের পাশে হাঁটাচলা করে। কিছুদিন আগেও এখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নাঙ্গলকোট ষ্টেশন মাস্টার রফিকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ঢাকাগামী ৭০৩ নং মহানগর গোধুলি ট্রেনে কাটা পড়ে বান নগর গ্রামের দুই জন মারা গেছে। এটি একটি দুর্ঘটনা।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম গিয়েছে। যেহেতু দুর্ঘটনায় বাবা ছেলের এমন করুন মৃত্যু হয়েছে-এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজনের অনুরোধে লাশগুলো ঘটনাস্থল থেকেই পরিবারের কাছে দিয়ে দেয়া হয়েছে।