ভারতের নতুন কৃষি আইন নিয়ে আজ রায় ঘোষণা করবেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এর
আগে সোমবার (১১ জানুয়ারি) নতুন এই আইন নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে ভর্ৎসনা করেন
আদালত।
গতকাল শুনানির সময় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত বলেছিলেন, কৃষি আইন নিয়ে তাদের
কাছে যতগুলো হলফনামা জমা পড়েছে, তার একটিতেও এই আইনের স্বপক্ষে কিছু বলা
হয়নি।
এদিকে, এই কৃষি আইন নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট যে মধ্যস্থতাকারী কমিটি
গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তা ইতোমধ্যেই খারিজ করে দিয়েছে দেশটির কৃষক
সংগঠনগুলো।
এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) কী রায় দেন,
সেদিকে তাকিয়ে পুরো দেশ। এছাড়া রায় ঘোষণার পর আবারও নয়াদিল্লির উপকণ্ঠে
কৃষক বিক্ষোভ শুরু হয় কি-না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
এরই মধ্যে, নতুন এই কৃষি আইনের প্রতিবাদে আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লির
রাস্তায় আন্দোলনকারী কৃষকরা ট্রাক্টর র্যালির করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
তবে সেটি আটকাতে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র সরকার যে হলফনামা জমা দিয়েছে, তাতে ২৬ জানুয়ারি
প্রজাতন্ত্র দিবসের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও সাংবিধানিক গুরুত্বের দিকটি উল্লেখ
করা হয়েছে।
আর ২৬ জানুয়ারির সেই অনুষ্ঠানের আগে ২৩ জানুয়ারি মহড়া রয়েছে। ২৮
জানুয়ারি এনসিসির র্যালি এবং ৩০ জানুয়ারি শহিদ দিবস। প্রজাতন্ত্র দিবসের
পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানগুলোর কথা উল্লেখ করে কেন্দ্র সরকার বলেছে, ‘উপরের
অনুষ্ঠানগুলোতে বাধা দেয়া কেবল আইন ভাঙা বা সরকারি নির্দেশ অমান্য করা নয়।
তা জাতির কাছেও অস্বস্তির।’
কৃষি আইন সংক্রান্ত একাধিক মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে দেশের
শীর্ষ আদালতে ট্রাক্টর র্যালি রদের বিষয়টি উল্লেখ করে কেন্দ্র। তখন আদালত
কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারালকে এ নিয়ে হলফনামা দিতে বলেন। তার পরই এই আবেদন
করে কেন্দ্র সরকার। কৃষি আইন বাতিল নিয়ে একাধিক মামলার একত্রে শুনানি করছেন
ভারতের শীর্ষ আদালত।
সোমবার কৃষি আইনের বিরুদ্ধে শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার
মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্র সরকারকে। কৃষক বিদ্রোহ মেটাতে কেন্দ্রের সদিচ্ছার
অভাব, আইন প্রণয়নে একগুঁয়েমির বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি এস এ
বোবদে।
তিনি বলেন, ‘কৃষি আইন রদ করতে কেন কোনো সাড়া নেই? কেন্দ্র এই আইন বাতিল
করতে রাজি হলে তবেই আমরা কৃষকদের আলোচনার টেবিলে বসতে বলব। স্পষ্ট করে
বলুন, আপনারা রদ করবেন, নাকি আদালত করবে? আমরা বুঝতে পারছি না, কেন যেকোনো
উপায়ে এই আইন চালু করতে চাইছে সরকার।’