জলপাই রঙের একটি ধূসর শার্ট, একটি পিস্তল, একজোড়া জুতো, তার মাঝেই
দাঁড়িভর্তি একটি অগোছালো মুখ; যে চেহারাটা ভাবলেই শরীরের সমস্ত রক্ত হিম
করে দেয়, মনে পড়ে সেই ‘গব্বর সিং’ এর কথা? এক সময় ‘বাজে লোক’ বলতে এই একটা
মুখই ফুটে উঠত মানসপটে। এখনো বলিউডে সেই ‘গব্বর সিং’র বেশ চর্চা। তবে
‘কুৎসিত’ রাজনীতি চট্টগ্রামের পাহাড়ে জন্ম দিয়েছে এ যুগের ‘গব্বর সিং’ কে।
তিনি নগরের অন্ধকার জগতের অঘোষিত ‘রাজা’ আকবর শাহ এলাকার সন্ত্রাসী নুরে
আলম ওরফে নুরু (৪০)।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মৃত ধনা মিয়ার ছেলে নুরুর জীবন-যাপন ছিল
অনেকটা বলিউডের ভিলেন ‘গব্বর সিং’ এর মতো। গুলি ও এলোপাতাড়ি কিরিচ চালানোয়
পারদর্শী নুরু। আছে তার প্রশিক্ষিত বাহিনীও। সেই বাহিনীর হাতেই ২০১৬ থেকে
২০১৯ সাল পর্যন্ত বেশ ক’বার হামলার শিকার হয়েছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায়
নিয়োজিত বাহিনী পুলিশ। সর্বশেষ গত ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর আকবর
শাহ থানার ১ নম্বর ঝিল এলাকায় নুরুকে গ্রেফতারে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময়
সন্ত্রাসীদের অতর্কিত আক্রমণে সেখান থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন পুলিশ
সদস্যরা। সেদিন উভয়পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনাও ঘটে।
তবে সিনেমার গব্বরের মতো
শেষ রক্ষায় হয়নি সন্ত্রাসী নুরুরও।
গত শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) রাতে তাকে সহযোগীসহ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ
উপজেলার শান্তির হাট থেকে আটক করে আকবর শাহ থানা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের
যৌথ টিম।
নব্বইয়ের দশকের
মাঝামাঝি কোনো এক সময় কুমিল্লা থেকে এসে চট্টগ্রামের ফিরোজ শাহ কলোনীর
নাছিয়া ঘোনা ১নং ঝিল এলাকায় বসতি গড়েন নুরুর বাবা ধনা মিয়া ভাণ্ডারী।
শিশুকাল থেকেই নাছিয়াঘোনায় বেড়ে ওঠেন নুরুল আলম ওরফে নুরু। তার কর্মজীবন
শুরু হয় নগরের ফয়স’লেকে কনকর্ড গ্রুপের কর্মচারী হিসেবে। সেই থেকে তার
পাহাড় যাত্রা। শুরুতে পাহাড়ে বসবাস ও পরে পাহাড়ের মাটি চুরি। এরপর পাহাড়
দখলের মাধ্যমে ঘটে নুরুর অন্ধকার জগতের বিস্তৃতি।