কুমিল্লায় মাদক ও চুরি-ছিনতাইসহ অতীতের কয়েকমাসের তুলনায় বেকর্ড পরিমাণ অপরাধ বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরি¯ি’তির বিঘ্ন ঘটায় গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সবশেষ নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে বেশি ৭৯টি অপরাধ সংঘটিত হয়। এরমধ্যে অপহরণ, সিঁদেল চুরি, চুরি-ছিনতাই, অস্ত্র আইন, দ্রুত বিচার, মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য অপরাধসহ ৮ ধরণের অপরাধের পরিমাণ বেড়েছে।
কুমিল্লা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির দেয়া তথ্য মতে, ডিসেম্বরে কুমিল্লা জেলায় ৪৪৯টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া অক্টোবরে ৪২৩ এবং নভেম্বরে ৩৭০টি অপরাধ সংঘটিত হয় কুমিল্লা জেলায়।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ডিসেম্বর মাসে সংঘটিত ৪৪৯টি অপরাধের মধ্যে খুন, নারী ও শিশু নির্যাতন, সিঁদেল চুরি, চুরি-ছিনতাই, চোরা চালান ও মাদকদ্রব্যসহ অপরাধের তালিকার শীর্ষে কুমিল্লার সদর উপজেলার আওতাধীন কোতয়ালী থানা। এই উপজেলায় সংঘটিত ৬৩টি অপরাধের মধ্যে রয়েছে চাঞ্চল্যকর দুইটি খুন। এছাড়াও ৫টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাসহ রয়েছে ৩টি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায়। ১৭ উপজেলা ও ১৮টি থানার মধ্যে কুমিল্লা সদরের পরের অব¯’ানে রয়েছে অরাধের তালিকায় রয়েছে দাউদকান্দি। এই উপজেলায় গত ডিসেম্বর মাসে ৫১টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এই উপজেলায় খুনের ঘটনা না থাকলেও রয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, মাদকদ্রব্য ছাড়াও ২৮টি অপরাধ। এর পরের অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা। ডিসেম্বরে এই উপজেলায় খুন, দস্যুতা, নারী ও শিশু নির্যাতন, সিঁদেল চুরি, চুরি-ছিনতাই, অস্ত্র আইন ও মাদকদ্রব্যসহ ৪৯টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
রবিবার (১০ জানুয়ারি) কুমিল্লা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির দেয়া আরও তথ্যে, কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ ও দাউদকান্দি ছাড়াও চৌদ্দগ্রামে ২৭, নাঙ্গলকোটে ১২, লাকসামে একটি খুনসহ ০৯, মনোহরগঞ্জে ০৯, বুড়িচং ৩১, ব্রাহ্মণপাড়ায় ৩৬, বরুড়া ২৮, চান্দিনা ৩৬, তিতাস ২৬, মেঘনায় ০৮, হোমনায় ০৭, মুরাদনগর ২৭, দেবিদ্বার ১৯, লালমাইয়ে ১১সহ সর্বমোট ৪৪৯টি অপরাধ বেকর্ড গড়েছে কুমিল্লায়।
অন্যদিকে নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে বেশি ৫টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। একটি করে পিস্তল, পাইপগান, এলজি ও ৩ রাইন্ড গুলিসহ ডিসেম্বরে ৭টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
অপরাধ বেড়েছে অভিযোগে সভায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, অপরাধ দমনে পুলিশ কাজ করছে। কুমিল্লায় আগম হয়েছে মাত্র সাপ্তাহ অতিক্রম করেছে। কুমিল্লা একটি বড় জেলা। আমি এই জেলাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। কুমিল্লার জনগণের তুলনায় পুলিশ সদস্যের পরিমাণ খুবই অপ্রতুল। এই জেলায় একজন পুশিল সদস্যে বিপরীতে রয়েছে প্রায় ১২’শ জন মানুষ। যার কারণে বলবো এই জেলায় অপরাধ দমনে পুলিশকে সহযোগিতার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
কুমিল্লা আইনশৃঙ্খলাকমিটি সভায় সিদ্ধান্ত কার্যক্রমে আরও জানা যায়, অপরাধ দমনে কুমিল্লা ১৭ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ৪১৬টি মোবাইল কোর্টে পরিচালনা করেন গত বছরের ডিসেম্বরে। ওইসব মোবাইল কোর্টে ১ হাজার ৯৯৬ টি মামলাসহ জরিমানার পরিমাণ ছিল ২৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৪০ টাকা। এছাড়া দুই হাজার ৩২৯ টাকা অর্থদণ্ডসহ ৪জন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছিলো।
সভায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বলেন, অপরাধ দমনে এবং কুমিল্লা শহরের ফুটপাত, সড়ক দখল, সরকারি সম্পত্তি বেদখল ও গোমতী নদীতে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত হয়েছে। এছাড়া খাদ্যে ভেজাল ও বাজার ¯ি’তিশীল রাখতে অভিযোগ ফেলেই অভিযান চালানো হবে।